
গ্রামীণ হরিলুট (শেষ পর্ব)
এম সাইফুল ইসলাম
সাচিয়াদহ পাতলা কপালিপাড়া বালা বাড়ি মন্দিরে গ্রীল নির্মাণে ২ লাখ ৩১ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ হয়। তবে এ বিষয় হয়নি কোন রেজুলেশন। জানে না মন্দির কমিটি।
সভাপতি গোবিন্দ বালা জানান, কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। এছাড়া এর হয়নি কোন রেজুলেশন।
তেরখাদা উপজেলায় টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পে নানা অনিয়ম উঠে এসেছে গণমাধ্যমে। আর এই সকল অনিয়ম ধামাচাপা দিতে ইতিমধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহেল রানা বিভিন্ন মহলে দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছেন। এছাড়া একটি কুচক্রী মহলকে সাথে নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তার অনিয়ম এর বিষয় ঢাকতে নানা ছক কষে যাচ্ছেন।
তথ্যমতে, এ উপজেলায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের টিআর কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পে বেশ কিছু ইউনিয়নের সামাজিক ও ধর্মীয় অবকাঠামগত উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দের বিষয় শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। তেরখাদা সদর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া যুব সংঘ ক্লাবের উন্নয়ন বাবদ ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৬৬ টাকা বরাদ্দ হলেও ক্লাব কর্তৃপক্ষ টাকার কোন ছিঁটাফোটা পায়নি। এছাড়া তেরখাদা সমতা ক্লাবের উন্নয়ন বাবদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। তবে ক্লাবের কোন উন্নয়ন তো দূরের কথা ক্লাবের জানলা দরজা ভেঙ্গে পড়ে আছে। অন্যদিকে সাচিয়াদাহ ইউনিয়নে পাতলা পূর্বপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের প্রাঙ্গণ মাটি ভরাটের জন্য ৪,১৫,৩২০ টাকা বরাদ্দ হলেও সামান্য কিছু টাকা দিয়ে মাটি ভরাট হয়েছে এবং মন্দির কমিটির কাছে অর্থ বরাদ্দের বিষয় কোন তথ্য নেই।
এ তো হাতে গোনা কয়েকটি হিসাবের অংকের খতিয়ান। এছাড়া আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। কোনটির কমিটি জানে না কি পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, আবার কোনটি যে প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে তা বাস্তবে দেখা যায় না। আর এই সকল অনিয়মের মূল হোতা হিসেবে বার বার যার নাম উঠে এসেছে তিনি হলেন তেরখাদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহেল রানা।
একটি সূত্রমতে জানা যায়, বান্দরবান জেলার নাইখ্যংছড়ি উপেজেলা থেকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বদলি হয়ে তেরখাদা উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসেবে অদ্যবদি কর্মরত রয়েছেন। তিনি যোগদান করেই তেরখাদায় একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ১৯ মাস এ উপজেলায় থেকে মোটা অংকের অর্থের মালিক বনে গিয়েছেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাকে অতিথি রাখা হয়। সে সকল অনুষ্ঠানে ভাল অংকের টাকা ডোনেট করেন বলে সূত্র জানায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার জানান, উপজেলা থেকে কোন কাজ পেতে হলে একটি কমিশন দিতে হয় সোহেল রানাকে। না হলে কোন কাজ জুটবে না। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করলে আর কিছু লাগে না।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহেল রানাকে তার ব্যবহারিত মুঠোফোন ০১৭১৪…..৫৭৮৬ তে বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন করার স্বার্থে বার বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
তেরখাদা প্রেসক্লাবের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিফাত জানান, পিআইও সোহেল রানার বিরুদ্ধে এর আগেও আমাদের কাছে অনেক বিষয় নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। সোহেল রানাকে স্থানীয়ভাবে কেউ কেউ সমার্থন করছে বলেই তিনি এভাবে কাজ করে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে।