
দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে চলতি আমন মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিস্তীর্ন ফসলের মাঠে আমন ধানের ফলন দেখে কৃষকের মুখে সোনালী হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। উপজেলার কৃষকরা জানায়,চলতি বছর দক্ষিনাঞ্চলের আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের ফলন ভাল হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি বছরে প্রায় ১৯ হাজার ১শত হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির আমন ধানের চাষ হয়। ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য ফসলি জমিতে প্রয়োজনীয় জৈব সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করায় এই বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিগত তিন মাসে হঠাৎ করে অতি বর্ষন ও জলাবদ্ধতার কারনে উপজেলার অধিকাংশ নিচু এলাকা ডুবে ছিল। ফলে কৃষকরা তাদের রোপনকৃত ধানের ফসলের আশা ছেড়ে দিয়ে ছিল। আবহাওয়া অনুকুলে থাকা এবং পোকার আক্রমন হবার পরও চলতি মৌসুমে ধানের ফলন ভাল হয়েছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ পরবর্তী ফসলি জমিতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করার কারনে ধানের বাম্পার ফলনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দেয়।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নসহ চরাঞ্চলে ধান কাটার ধুম পড়ে ছিল। হালকা শীতের আমেজে সকাল থেকে শুরু করে সুর্যাস্ত পর্যন্ত কৃষকদের ধান কাটার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো ছিল। উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতের মৃদু বাতাস মাঠের সোনালী আমন ধানের গোছা দোলা দিয়ে ছিল। ধানের ন্যায্য মূল্য পেলেই কৃষকরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলে আশা করছে। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। উপজেলার কৃষকরা ক্ষেতে পাঁকা ধান দেখে বাম্পার ফলন আশা করছেন। উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া, দক্ষিন দাসপাড়া, গছানী ও বহরমপুর ইউনিয়ানের বগুড়া গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে মাঠ ভরা পাকা আমন ধান। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা আশা করছেন আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই বছর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১৯ হাজার ১শ” হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে। মাঠ ঘুরেও এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। তবে অসময়ের বন্যায় বেশ কিছু জমির ফসল ডুবে গেলেও সেগুলো নিয়ে কৃষি বিভাগ চিন্তিত ছিল না। তাদের দাবি, নীচু জমির ধান ডুবে গেলেও বন্যার স্থায়িত্ব কম থাকায় আমন ধানের তেমন একটা ক্ষতি হয়নি। এই ব্যাপারে বগুড়া গ্রামের কৃষক মোঃ ইউনুছ তালুকদার(৪৭), নশা মিয়া (৫৭), আলতাফ হোসেন (৫৫) জানান, তারা সবাই বর্গা চাষি। প্রতি বছর তারা ৪-৫ একর জমি চাষ করছেন। ফসলি জমিতে কীটনাশক, সার, সেচের পানি, শ্রমিকের মজুরি, মজুদ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতের ক্রমবর্ধমান খরচের পর ধানের ন্যায্যমূল্য পেলে কৃষকরা লাভবান হবে। গত মাসের শেষ থেকে শুরু হয়েছে ধান কাঁটা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.জাফর আহমেদ বলেন, এই বছর আমাদের আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল তা ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, কৃষকরা যদি ধানের ন্যায্যমূল্য পায় তবে ধানের উৎপাদন প্রতি বছর এভাবেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত