
দশমিনা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে খাল, বিল, পুকুর, জলাশয়, ডোবা, নালায় পর্যাপ্ত পানি থাকার পরও দেশী প্রজাতির মাছের উৎপাদন কম হয়েছে। প্রাকৃতিক ভাবে এই সব মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য বৃষ্টিপাত প্রয়োজন হলেও চলতি বর্ষা মৌসুমে কাংখিত বৃষ্টি হওয়ায় পরও দেশী প্রজাতির মাছের ডিম ফুটে পোনার জন্ম হয়নি। বর্ষায় ডিমওয়ালা মা মাছ ডিম ছাড়ার আগেই জেলেরা শিকার করায় ডিম ছাড়তে পারেনি। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের খাল-বিল পানিতে ডুবে থাকার পরও দেশী প্রজাতির বিভিন্ন জাতের মাছের উৎপাদন কমে গেছে। এছাড়া মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে খালে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনার জন্য খনন করা ও খালের উৎসমূখের প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে ফেলা প্রয়োজন। বর্ষায় মাছের প্রজনন মৌসুম ও পোনা মাছের বৃদ্ধিকালীন সময় অবাধে ছোট-বড় মাছ শিকার করার কারনে মৎস্য সম্পদ দিন দিন কমে যাচ্ছে।
উপজেলায় মাছের ক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত আলীপুরা, বাঁশবাড়িয়া, রনগোপালদী, চরবোরহান, দশমিনা, বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের বড় বড় বিল,জলাশয়,খাল,পুকুর এখন মাছ শূন্য হয়ে গেছে। উল্লেখিত এলাকায় বোয়াল, মাগুর, শিং, কৈ, টেংরা, শোল, টাকি, পুটি, গজার, চাপিলা, খৈইলশা, পাবদা, আইড়, চিংড়ি, মলা, বাইন, বেলে সহ অর্ধ শতাধিক প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্ত হবার পথে রয়েছে। উপজেলার সর্বত্র নিষিদ্ধ ঘোষিত জালের অবাধ ব্যবহার, কৃষি জমিতে সার ও কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহার,বর্ষাকালে প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা মাছসহ পোনা নিধন,শুস্ক মৌসুমে মাছ ধরার প্রবনতা এবং মাছের বিচরন ক্ষেত্র কমে যাওয়ায় মৎস্য সম্পদ কমতে শুরু করেছে। এছাড়া মাছের প্রজনন মৌসুম ও পোনা মাছের বৃদ্ধিকালীন সময় অবাধে ছোট-বড় মাছ শিকার করার কারনে মৎস্য সম্পদ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বিগত ২০ বছর আগে গ্রামাঞ্চলে সর্বত্র দেশী প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম লক্ষীপুর খাল, আবুতারা খাল, গাজীপুরা খাল, গয়নাঘাট খাল, পূর্ব লক্ষীপুর বাবুর খাল, আলীপুর ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের কেয়ার খাল, ইঞ্জি নারায়ন খাল, শিংবাড়িয়া খাল,গুলবুনিয়ার খাল, রণগোপালদী ইউনিয়নের কাটাখাল, আউলিয়াপুর গ্রামের নাপ্তার খাল, তালতলার হোতা খাল পানি শূন্য হয়ে জীর্ন শীর্ন সরু খালে পরিনত হয়ে গেছে। এই সব খালে মাটি ভরাট ও বাঁধ দেয়ায় মাছের বিচরন ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে প্রতি বছর পানি শূণ্যতায় দেশী প্রজাতির মাছের বংশ বিস্তারের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বাঁধ ও অপরিকল্পিত কালভার্ট নির্মাণের ফলে বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে পানি আসতে পারছে না। প্রাকৃতিক পানির উৎস বৃষ্টির পানি জমতে না পারায় মাছের ডিম ফুটতে পারছে না। ফলে মাছের বংশ বিস্তার সহ দেশী প্রজাতির মাছের উৎপাদন কম হচ্ছে।

