
দশমিনা(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চাইতে বেশী পরিমান জমিতে আমন ধানের চাষ করা হচ্ছে। যথা সময়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমন ধানের ক্ষেত সবুজে সবুজে ভরে যাচ্ছে। বেশ কয়েক দিন বৃষ্টি থাকায় কৃষকরা আমন ধানের বীজ রোপণ করলেও পানির কারনে তা মরে যাওয়ার উপক্রম হয়ে ছিল। তবে এখন জমিতে কোন জলাবদ্ধতা নেই। কৃষি বিভাগ ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমন থেকে রক্ষার জন্য কৃষকদেরকে আলোক ফাঁদ ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই বছর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১৮হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে শ্রাবণে মাসে আবারও বৃষ্টি কমে যাওয়ায় কৃষকরা শঙ্কিত ছিল। চলতি বছর সময় মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে কৃষকরা আশা করছে। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চাইতে আমন ধানের আবাদ করা হয়। উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিন দাসপাড়া গ্রামের কৃষক জামাল হাওলাদার, আবুল হোসেন, মাহ আলম রাঢি ও শংকর চন্দ্র জানান, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে আমন চাষ করা হয়ে থাকে। এই কারণে আমন আবাদে সেচ খরচ কম হয়। কিন্তু এই বছর বর্ষাকালে বর্ষন বেশী হওয়ায় তাদের হতাশায় দিন কাটেছে। বৃষ্টির কারনে আমনের চারা রোপণ করতে পারেননি। তবে কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে তাদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের বগুড়া গ্রামের চাষি ইউনুছ জানান, এই বছর বৃষ্টির পানির কারনে ক্ষেতে চাষ দিতে পারছিল না। তিনি বলেন, আমন ধানের চাষ পুরোটাই নির্ভর করে বৃষ্টির ওপর। কিছুটা বৃষ্টি হওয়ার পর মধ্য আষাঢ় থেকে বীজতলা প্রস্তুতের কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু এবার শ্রাবণেও বৃষ্টি বেশী হওয়ায় হতাশা দেখা দিয়ে ছিল।
উপজেলার দশমিনা সদর ইউনিয়নের আরজবেগী গ্রামের আধিত্য চন্দ্র বলেন, আমাদের উপজেলার বেশিরভাগ জমি এক ফসলি। আমন মৌসুমে আমন ধান চাষ করে কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হন। কিন্তু এই বছর আমন মৌসুমে বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের ধান চাষে অনেক বিলম্ব হয়ে ছিল। বৃষ্টির পানিতে বেশি লবণ কাটে, যা সেচের পানিতে কাটে না।
এই ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাফর আহমেদ বলেন, বৃষ্টির কারনে সারা দেশে আমন আবাদে এই অবস্থা বিরাজ করে ছিল। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছি। তবে আমন মৌসুমের ধান রোপণের সময় খুব বেশি পিছিয়ে যায়নি। আগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত রোপণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমন আবাদ নিয়ে কৃষকের পাশাপাশি কৃষি অফিসও সতর্ক ছিল। তারপরেও চলতি বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে।