দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে নির্মিত ৩০টি লোহার সেতু যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই সব সেতু দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে থাকলেও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্যদিনের পুরাতন এই সব সেতুগুলো যে কোন মুহুর্তে ধসে পড়ে প্রাণহানির আশংকা করা হচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্মানকৃত কিছু সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকা এবং দীর্ঘ প্রায় ২১ বছর সংস্কার না করায় কোন কোন সেতুর স্লিপার ও এ্যাঙ্গেল ভেঙ্গে খালে পড়ে গেছে। সেতুগুলোর মধ্যে দশমিনা-যৌতা খালের ওপর নির্মিত পুর্ব ও পশ্চিম লক্ষ্মীপুর ১টি, চরহোসনাবাদ-নেহালগঞ্জ জোড়পুল সেতুর নির্মানের ২৫ বছর অতিবাহিত হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। অবশিষ্ট সেতু নির্মানের পর সংস্কার করা হয়নি। উপজেলার খারিজা বেতাগী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলামের জানান, ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর জমিন মৃধা বাজার সংলগ্ন সুতাবাড়িয়া খালের ওপর নির্মিত সেতু ভেঙ্গে পড়ে ঐ এলাকার রিফাত মৃধার কন্যা ইসরাত জাহান (৫) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। উপজেলা সদরের দশমিনা-যৌতা খালের ওপর নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মান না করায় পশ্চিম ও পুর্ব লক্ষ¥ীপুর এই দুই গ্রামের মানুষের উপকারে আসেনি বরং সেতুটি শিশু- বৃদ্ধাদের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ন ৩০টি সেতুর মধ্যে ২২টি সেতুই অধিক ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় আছে। সেতুগুলোর অবস্থা বর্তমানে খুবই বিপদজনক। সেতুগুলো হচ্ছে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের নিজহাওলা খায়েরহাট আয়রন সেতু, আলীপুরা ইউনিয়নের নকানী বাড়ির সেতু, আলীপুর কালামিয়ারহাট কোটখালী আয়রন সেতু, স্লুইজ বাজার গিলাবাড়িয়া জোড়া সেতু, রনগোপালদী ইউনিয়নের যৌতা বাজার আলী জিসি ভায়া আশু মোল্লার হাট আয়রন সেতু, আলীপুরা জিসি সিদ্দিক মোল্লা বাড়ি সংলগ্ন আয়রন সেতু, আলীপুর বাজার আরএসডি রনগোপালদী ইউপিসি আয়রন সেতু, আনোয়ার মেম্বার গেদুরহাট সেতু, নিজাবাদ আশ্রয়ন রনুয়া হাট সেতু, যৌতা চান্দার বাধ এস.এস সড়কের আয়রন সেতু, সানকিপুর বটতলা বাজার সেতু, আবুল কালাম খান বাড়ির সংলগ্ন খান বাজার সেতু, বগুড়া আরএসডি কাপুরপট্রি সেতু, চাদপুরা বাজার মৌ-বাড়িয়া সেতু, বিবিরায় হাইস্কুল সংলগ্ন সেতু, রমানাথসেন ব্রিজ, ইউজেটএইচকিউ সদর বগি সেতু, আদমপুরা হাতেম ডাক্তার বাড়ি সংলগ্ন সেতু, কাটাখালী গাজী সড়ক সেতু, উত্তর রনগোপালদী কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন সেতু, বড়গোপালদী আব্দুল লতিফ মৃধা বাড়ি সংলগ্ন সেতু, চরঘূর্নি বিডব্লিউবি ইমভেনমেন্ট বাধ সংলগ্ন আয়রন সেতু অধিক ঝুকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। আলিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সাগর জানায়, নকানী বাড়ীর সামনে ঝুকিপূর্ন সেতু’র কথা এলজিইডি অফিসে কয়েক বার বলেছি। তারা সেতু সংস্কার বা পূনঃ নির্মাণ কোনটাই এখন পর্যন্ত করেনি। ফলে ঐ এলাকায় সেতুর অভাবে কয়েক শত মানুষের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা যায়, উপজেলার ঝুঁকিপূর্ন সেতুর তালিকা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো সেতু নতুন ভাবে নির্মান করে দেয়া হবে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত