বিধান চন্দ্র ঘোষo দাকোপ : খুলনার দাকোপের বিভিন্ন এলাকায় গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি খড়ের দামও বেড়েছে কয়েকগুণ বেশি। ফলে কচুরিপানাসহ স্বল্প মূল্যের বা বিনামূল্যের গো-খাদ্যের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। কিন্তু এতে গরুগুলোর স্বাস্থ্যহানি ঘটার পাশাপাশি দুধ উৎপাদনও ব্যাপক কমে গেছে। এতে কৃষকরা গবাদি পশু পালন নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের তথ্যানুযায়ী এই উপজেলায় ৯৮ হাজার ৫৬০টি গরু, ১৬৫টি মহিষ রয়েছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভার সর্বত্রই গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। গো-খাদ্যের এই সংকটকে পুজি কিছু সুবিধাবাধি কিছু লোক গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কম দামে খড় এনে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন। এতে কৃষকরা গবাদি পশু পালন নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
পানখালী এলাকার শশান রায় বলেন, গত বছর আমনের ফসল ভালো না হওয়ায় খড়ের ঘাটতি পড়েছে। প্রতিদিন তার ৫/৭টা গরুর প্রায় আধা বোঝা খড় লাগে। বর্তমান যে সকল কৃষকদের খড় বেশি আছে তাদের কাছ থেকে এক বোঝা খড় ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে তাও মিলছে না। গবাদি পশুর বিকল্প খাদ্য হিসাবে গলা গাছ ও কচুরিপনা খেতে দিতে হচ্ছে। ধান ক্ষেতে ঘাসও মিলছে না। এতো বেশি দামে খড় কিনে গরু পালন করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এখন তিনি গরু বিক্রি করে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান। তার মত বিভিন্ন এলাকার একাধিক কৃষক একই অভিমত ব্যক্ত করেন।
খড় বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে খড় এনে ছোট ছোট বোঝা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন। লাভ ভালো হওয়ায় এখন তিনি খড়ের ব্যবসা করছেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের কর্মকর্তা ডাঃ বঙ্কিম কুমার হালদার বলেন, প্রতিটি বাড়িতে একাধিক গরু ছাগল আছে। বর্তমানে গবাদি পশুর চরম খাদ্য সংকট চলছে। বিকল্প খাদ্য হিসেবে গলা গাছ ও কচুরিপনা খাওয়াতে হচ্ছে। এতে তেমন একটা শক্তি না থাকায় গবাদি পশুর স্বাস্থ্য হানি হতে পারে। তারপরও খাওয়াতে হবে। তবে বন তুলসি নামে আগাছা খাওয়ালে বিষ ক্রিয়ায় গরু মারা যেতে পারে। ইতি মধ্যে কয়েকটি মারাও গেছে। তিনি সকল কৃষককে এ আগাছা খাওয়ানো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে। আর যদি কখনো মন্ত্রনালয় থেকে বাজেট আসে তাহলে সকল কৃষককে গো-খাদ্য সরবরাহ করা হবে।
দাকোপে গো-খাদ্যের চরম সংকটে কৃষকরা দিশেহারা
Leave a comment