দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনার দাকোপে সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসলামুল হক মিঠু বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি গত ফেব্রুয়ারি মাসে যোগদান করে কালিনগর ক্লাষ্টারের দায়িত্বে আসার পর এ পর্যন্ত কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন স্লিপ বরাদ্দের ও শিক্ষকদের সাব ক্লাষ্টার প্রশিক্ষণের কয়েক লক্ষ টাকা।
সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মোট ১১৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। উক্ত বিদ্যালয়গুলো ৪টি ক্লাষ্টারে বিভক্ত। এর মধ্যে কালিনগর ক্লাষ্টারের দায়িত্বে রয়েছেন ওই সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসলামুল হক মিঠু। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বিদ্যালয় প্রতি স্লিপ বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান পায়। এর মধ্যে কালিনগর ক্লাষ্টার ভূক্ত ৩২টি বিদ্যালয়ও অনুরুপ অনুদান পায়। কিন্তু উক্ত স্লিপের ওই বরাদ্দের প্রথম কিস্তি ৩৫ হাজার টাকা উত্তোলন করতে চেকে স্বাক্ষর বাবদ বিদ্যালয় প্রতি ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা অগ্রিম ঘুষ নিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। বাকি ১৫ হাজার টাকা উত্তোলনে ২য় কিস্তিতেও অনুরুপ ভাবে টাকা নিয়েছেন তিনি। এছাড়া গত মার্চ মাসে সাব ক্লাষ্টার প্রশিক্ষণে ৩২টি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজিরা সিটে স্বাক্ষর নিলেও তাদের সম্মানি ভাতা না দিয়ে তিনি নিজে আত্মসাত করেছেন। তাছাড়া বিদ্যালয় পরিদর্শনের নামেও শিক্ষকদের হয়রানি নির্যাতনসহ নানা অজুহাতে টাকা আদায় করেন। কয়রা উপজেলায় একই পদে দায়িত্বে থাকাকালিন উল্লেখিত অনিয়ম দূর্নীতিসহ প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করায় এক শিক্ষকের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর করা অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় ইসলামুল হক মিঠু বিরুদ্ধে বিভাগিয় মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালিনগর ক্লাষ্টারের একাধিক শিক্ষক এ প্রতিবেদকে জানান, বিদ্যালয় প্রতি স্লিপ বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা ২ কিস্তিতে উত্তোলনে প্রত্যেক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসলামুল হক মিঠু। এছাড়া সাব ক্লাষ্টার প্রশিক্ষণে ৩২টি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মানি ভাতা না দিয়ে তিনি নিজে আত্মসাত করেছেন। আর বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে বিভিন্ন অজুহাতে ভীতিকর পরিস্থিতি ও অযৌতিক কারণ দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে আদায় কারা হয় উৎকোচের টাকা। তাছাড়া অপ্রয়োজনীয় নির্দেশনার মাধ্যমে শিক্ষকদের হয়রানির উদ্দেশ্যে শো-কজ করা হয়। টাকা দিলে শো-কজের জবাব মাফ হয়ে যায়। আর টাকা না দিলে বিভিন্ন মামলার ভয়ভীতি দেওয়া হয়।
উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রিক্তা মিস্ত্রি বলেন, আমার কাছে কালিনগর ক্লাষ্টারের অনেক শিক্ষক ওই কর্মকর্তার সিমাহীন ঘুষ দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। আমি বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
এবিষয়ে সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসলামুল হক মিঠু জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। আসল ঘটনা হলো এক শিক্ষক নিয়ম বহির্ভুত বদলি হয়েছে। এবিষয়টি অনেক দুর অবদি গড়িয়েছে। সে এখন চিন্তা করছে আমি এসব ঘটিয়েছি। তাই সে আমার বিরুদ্ধে এসব বানোয়াট ঘটনা রটাচ্ছে।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) দিপ্পল বিশ^াস বলেন, এবিষয়ে আমার কাছে এখনো কোন শিক্ষক লিখিত অভিযোগ করেনি। যদি লিখিত অভিযোগ করে তাহলে তদন্তে প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত