জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনার দিঘলিয়ায় জামান জুট মিলস কর্পোরেশন নামক একটি প্রতিষ্ঠানের পরিশোধকৃত বিদ্যুৎ বিল সমন্বয় না করে অতিরিক্ত বিল দাবি এবং পরবর্তী বিনা নোটিশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকে কেন্দ্র করে শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের ফলে বেতন বোনাস বন্ধ হওয়ার আশংকায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মিলের ক্ষতি সাধন করে। এ সময় মিল ও ওজোপাডিকো’র কয়েকজন কর্মকর্তা শ্রমিকদের হাতে লাঞ্ছিত হন। বুধবার দুপুর ১২টার এ ঘটনার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।
দিঘলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিপন কুমার সরকার বলেন গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত এখন কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
স্থানীয় ও পুলিশ সূএে জানা যায়, ‘জামান জুট মিলস করর্পোশেন’ দিঘলিয়া খুলনা একটি শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের নামে ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫১৭ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হয়। এর মধ্যে গত ১০ মে ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৪১১ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়। ফলে আনুমানিক প্রায় ৬ লাখ টাকা বকেয়া ছিল। কিন্ত্র বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ উক্ত প্রদানকৃত বিল (টাকা) সমন্বয় না করে ৩০ মে পুনারায় ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫১৭ টাকার বিদ্যুৎ বিলের কপি মিল বরাবর প্রেরণ করে। সর্বশেষ বুধবার বিনা নোটিশে ওজোপাডিকো খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল স্বর্ণকারের নির্দেশে সহকারী প্রকৌশলী মোঃ তামিম হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নুর ইসলাম ও সাহায্যকারী (আউটসোর্সিং) মোঃ মনির হোসেন দুপুর ১২টারদিকে মিল চালু অবস্থায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। যার কারণে মিলের শ্রমিকগণ বেতন বোনাস বন্ধ হওয়ার আশংকায় ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি করে।
জামান জুট মিলস কর্পোরেশনের নির্বাহী পরিচালক মোঃ রিপন মোল্লা প্রতিবেদককে বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন খামখেয়ালী করে হঠাৎ করে বিনা নোটিশে বুধবার দুপুরে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়াার কারণে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে মিলের ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে মিলের ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়। এ সময় শ্রমিকদের তোপের মুখে মিলের স্টোর কিপার মাহবুব চন্দন ও উৎপাদন সহকারি মনির হোসেন আহত হয়। তাৎক্ষণিক তাদের দুজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রো ভর্তি করা হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, একটি শতভাগ রপ্তানী মুখী প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও বার বার কারণে অকারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ চাপ প্রয়োগ করে থাকে। তিনি আরো বলেন গত ১০ মে ১৭ লাখ ২৬ হাজার ৪১১ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করি। কিন্ত্র বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ উক্ত প্রদানকৃত বিল (টাকা) সমন্বয় না করে ৩০ মে পুনারায় ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫১৭ টাকার বিদ্যুৎ বিলের কপি মিল বরাবর প্রেরণ করে । ওজোপাডিকো খুলনার-৩ নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল স্বর্ণকার আমাকে ফোনে বিল পরিশোধ করার তাগিদ দেয়। তাকে আমার পূর্বের বিল থেকে ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫১৭ টাকা সমন্বয় করে নতুন বিল পাঠানোর জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল স্বর্ণকার পূর্বের বিল থেকে পরিশোধ করা টাকা সমন্বয় না করে আবারও পূর্বের বিল পরিশোধ করার জণ্য চাপ মিল কর্তক্ষকে দেয়
ওজোপাডিকো খুলনার-৩ নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল কুমার স্বর্ণকার এ প্রতিবেদককে বলেন, জামান জুট মিলস কর্পোরেশন এর কাছে পূর্বের ২৫ লক্ষ টাকা বকেয়া ছিল। মাঝে তারা ১৭ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছে। আর বাকি আছে ৮ লক্ষ টাকা। আবারও জামান জুটকে ২৫ লক্ষ্য বিল দেওয়া হয়। কিন্তু তারা বিল পািশোধ না করায় বুধবার জামান জুটের মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য সহকারী প্রকৌশলী তামিম হোসেন ও নুর ইসলাম গেলে তাদেরকে মারধর করা হয়। তাৎক্ষণিক আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে ঘটনাটি মীমাংসা করি।