এস এম মেহেদী হাসান, দিঘলিয়া : দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড অবস্থিত বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটিতে দুর্বৃত্তদের হামলা লুটপাট ও ভাঙ্গচুর হয়েছে। হামলার এক মাসেরও অধিক সময় পার হলেও কোনো অপরাধীকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা ও লুটপাট হওয়া মালামাল উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে নি প্রশাসনসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।
সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ৫ই আগষ্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যগের পর দিঘলিয়া জনপদে ঘটে ব্যাপক দুর্বৃত্তায়ন। বসতবাড়ি, দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস, সরকারি রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের গাছপালা কোনো কিছুই রক্ষা পাইনি দুর্বৃতদের হাত থেকে। গত আগষ্ট মাসের ৫, ৬ ও ৭ তারিখে গোটা দিঘলিয়া উপজেলা জনপদে চলে বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিসসহ নানা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট, ভাঙ্গচুর, অগ্নিসংযোগের মত ঘটনা। পাশাপাশি চলেছে নিরব চাঁদাবাজি। এ ঘটনা থেকে রেহাই পাইনি দিঘলিয়া উপজেলার সম্পদ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটিও।
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সেনহাটি বাজারের পূর্ব অংশের উত্তর কোল ঘেষে অবস্থিত এ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি। সারা দিঘলিয়া জনপদে ঘটে যাওয়া দুর্বৃত্তায়নের পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানটির উপরও হামলা, লুটপাট, ভাঙ্গচুরের লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে। গত ৫ ও ৬ আগষ্ট অর্ধ শতাধিক সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্ত, লাঠিশোটা, রামদা, কুড়াল, শাবলসহ নানা দেশী অস্ত্র নিয়ে কমপ্লেক্সটিতে হামলা, ভাঙ্গচুর ও লুটপাট চালায়। দুর্বৃত্তদের ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকারও অধিক। লুটপাট হয়েছে জেনারেটর ১টি, মটর ১টি, ৪২ ইঞ্চি টিভি ১টি, কম্পিউটার ১টি, প্রিন্টার মেশিন ১টি, গদী চেয়ার ২২টি, সেক্রেটারিয়েট চেয়ার ২টি, প্লাস্টিক চেয়ার ৫৬ পিচ, বৈদ্যুতিক ফ্যান ৫৬ ইঞ্চি ২২টি, টেবিল বড় ৪টি, ডেক পাতিল বড় ঢাকনাসহ ৪টি, সাউন্ড বক্স ২টি, ফ্লাক্স বড় ২টি, কাপ প্লেট ২ সেটে ২৪পিচ, বড় প্লেট ১৭টি, বালতি-গামলা বড় ৪টি, ব্যাটারী ১২ ভোল্ট সোলার ৪টি, তালা ৮টি, লোহার ঢাকনা বড় ১টি, নগদ টাকা ২ হাজার, কম্বল ৮টি, বৈদ্যুতিক মূল মিটার ১টি, সাব মিটার ৩টি, স্মার্ট সিসি ক্যামেরা ২টি, গ্লাস বড় ১২টি, এস এস এর রেলিং ৪টিসহ প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ৫০ পিচেরও ওপরে থাই গ্লাস।
ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসনসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যগণ ক্ষতিগ্রস্থ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি পরিদর্শন করেছেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও জানানো হয়েছে। হামলা লুটপাট ও ভাঙ্গচুরের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ বাবুল আকতার দৈনিক জন্মভূমি প্রতিনিধি কে জানান, এ ব্যাপারে দিঘলিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী আজগর আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের শণাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
দিঘলিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে হামলা লুটপাট ও ভাঙ্গচুরকারী ধরাছোঁয়ার বাইরে
Leave a comment