ডেস্ক রিপোর্ট : শারদীয় দুর্গাপূজার আজ বিজয়া দশমী। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। পাঁচ দিনব্যাপী এই শারদ উৎসবের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও একটি বছর। আজ বৃহস্পতিবার বিসর্জনের দিন সকালে হবে দশমীর বিহিত পূজা। পূজা শেষে দর্পণ ও বিসর্জন। শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন।
বুধবার মহানবমীতে মন্দির, মণ্ডপে যেন মিলেমিশে গেছে আনন্দ-বেদনা। দেবীর বন্দনায় ছিল ভিন্ন এক আবহ। পূজার উদযাপন আর দেবীকে বিদায়ের সুর বেজেছে ভক্তের হৃদয়ে। সকালে কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হয় নবমীর আনুষ্ঠানিকতা। পূজা শেষে ভক্তরা দেবীর চরণে অঞ্জলি নিবেদন করেন। ভক্তদের হৃদয়ে মগ্নতা আনতেই যেন এল দুপুরের হঠাৎ বৃষ্টি। উপজেলার গাজীরহাট, বারাকপুর, দিঘলিয়া ও সেনহাটি ইউনিয়নের মণ্ডপগুলোতে বিকেলের আগ পর্যন্ত নবমীর উৎসব ছিল শান্তলয়ের।
বারাকপুরের বেশ কিছু মন্দীরের প্রতিমা নদীতে বিসর্জন হয়না বলে জানালেন মন্দীর সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ। তিনি আরও বললেন, গাজীরহাট বাজার, জুঙ্গশিয়া, ডোমরা, সোনাকুড়, গাজীরহাট মহাশ্মশান, আবালগাতী, আমরাড়িয়া, মাঝিরগাতী, কেটলা, বাগমারা, পারমচন্দপুর গ্রামে মোট ২৭ টি মন্দীরে এ এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পালিত হয়।
উপজেলার যে সকল মন্দীরে দূর্গা প্রতিমা বিসর্জ্জন হয়না সে সকল মন্দীরে বিজয়া দশমীতে হয় ঘট বিসর্জন। সাতটি করে ঘট স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে দেবী দুর্গার জন্য স্থাপিত প্রধান ঘটটি ছাড়া বাকি ছয়টির বিসর্জন হবে দশমীতে।
দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৮টি পয়েন্টে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। সেনহাটি একতা সংঘ উত্তর চন্দনীমহল বাসুদেব দত্তের বাড়ি মণ্ডপটি এবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে নান্দনিক সজ্জার জন্য। নানা রঙের আঁচড়কে প্রাধান্য দিয়ে ছিমছামভাবে সাজানো হয়েছে। বৃষ্টির জন্য বিকেল পর্যন্ত মানুষ কম থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে এ মণ্ডপে উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হয়। বিজয়া সপ্তমীর দিনে উপজেলা প্রেসক্লাব দিঘলিয়ার নেতৃবৃন্দ এ মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন। আগন্তকগণ এ সময় মন্দীরের সভাপতি ব্রজলাল শীল ও সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিকের সাথে কথা বলেন। এ মন্দিরের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য গৃহীত ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। এখানে আরো এসেছেন দিঘলিয়া থানা পুলিশ ও সেনহাটি ফাঁড়ি পুলিশ ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী দিঘলিয়া কন্টিনজেন্টের টহল টিম।
এদিকে দিঘলিয়া উপজেলার দিঘলিয়া সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ৬টি মন্দীরে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সকল মন্দীরে শান্ত ও আনন্দঘন পরিবেশ পরিলক্ষিত হয়। মঙ্গলবার দিঘলিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ দিঘলিয়া গ্রামের দিঘলিয়া দক্ষিণেশ্বরী কালিবাড়ী সার্বজনীন পূজা মন্দীর পরিদর্শন করেন। সেখানে এ মন্দীরের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে উপজেলা প্রেসক্লাব দিঘলিয়ার নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ মন্দিরের পারিবেশ ছিল চোখে পড়ার মত। তা ছাড়া এ মন্দিরে দিঘলিয়া থানা পুলিশের টহল টিমও মন্দিরটি পরিদর্শন করেছেন। আনসার টিম ছিল সচেতন ও সজাগ।
এ বছর দিঘলিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৬১টি পূজামণ্ডপ হয়েছে। এর মধ্যে গাজীরহাট ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি মণ্ডপ হয়েছে ২৭টি। আজ বিজয়া দশমীতে সকালে দর্পণ বিসর্জনের পর থেকে শুরু হবে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি। দিঘলিয়ার অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হবে আতাই ও ভৈরব নদীতে। সর্পপরি বলতে হয় দিঘলিয়া উপজেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজায় পূজামন্ডবগুলোতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, দিঘলিয়া পুলিশ, আনসার সদস্যের পাশাপাশি প্রতিটা মন্দিরের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছেন। আজ প্রতিমা বিসর্জ্জন কার্জ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ শৃঙ্খলা বেষ্টনী অব্যাহত থাকবে। দিঘলিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু সৌমিত্র দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক বাবু প্রদীপ বিশ্বাসসহ সকল নেতৃবৃন্দ। পূজামন্দীরগুলোর শৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলস প্রচেষ্টার জন্য সকলের প্রতি শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করেছেন।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত