জন্মভূমি ডেস্ক : কালবৈশাখী ঝড়ে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন শিশুসহ কমপক্ষে ৩০ জন। উপড়ে পড়েছে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি। ধানসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৬ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। দেড় ঘণ্টা চলে তাণ্ডব।
বুধবার উপজেলার সদর, পার্থশী, চিনাডুলি, নোয়ারপাড়া, পলবান্ধা ইউনিয়ন ও পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে বসতবাড়ি, ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির দৃশ্য দেখা গেছে।
পৌর শহরের দক্ষিণ কিংজাল্লা গ্রামের আকলিমা বেগম বলেন, কোনোরকমে সন্তানদের নিয়ে বেঁচে গেছি। সবকিছু ভেঙে গেলেও এখন পর্যন্ত কেউ খোঁজ খবর নেননি। দুপুর ১টা বাজে এখনও না খেয়ে আছি।
একই এলাকার আবু হাসেম দুদু মিয়া জানান, হঠাৎ ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হলে ঘরের ওপর তিনটি গাছ উপড়ে পড়ে। ভেতরে আমিসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য আটকা পড়ি। পরে মোবাইল ফোনে আমার বড় ছেলেকে জানালে সে এসে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় আহত এক নাতিকে সাত ও নাতনিকে তিন সেলাই দিতে হয়েছে।
পার্থশী ইউনিয়নের পশ্চিম ঢেংগারঘর গ্রামের মেছের আলী বলেন, জীবনেও এমন ঝড় দেখিনি। মুহূর্তের মধ্যেই দুটি ঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ঘরের চাল একদিকে আমি আরেকদিকে পড়ে যায়। অল্পের জন্য বেঁচে গেছি।
ওই এলাকার সুজন শেখ বলেন, ঝড় মুহূর্তের মধ্যেই সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে ফেলে। বাড়িতে বসবাস করার মতো ঘর নেই। এখন পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার ও প্যানেল মেয়র খুরশেদুজ্জামান লেবু মিয়া জানান, শুধু আমার ওয়ার্ডেই প্রায় ৩০০ পরিবারের বসতবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়েছে। আরও বাড়বে তালিকা করা হচ্ছে।
পার্থশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম বাবুল বলেন, ঝড়ে আমার ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ বলেন, ঝড়ে আহত হওয়া ২৮ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও গুরুতর আহত অবস্থায় ছয় জনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও দুর্যোগ ত্রাণ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে পৌর শহরসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এখনও সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইউএনও তানভীর হাসান রুমান বলেন, সকাল থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিদর্শন করছি। সঠিক তথ্য জেনে জানানো হবে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত