ক্রীড়া প্রতিবেদক : বাংলাদেশের মাঠেই টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। মিরপুর টেস্টের দলে প্রথমে তাঁর নামও ছিল। পরবর্তীতে তাঁকে ১৫ সদস্যের দল থেকে বাদ দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত তাতে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
মিরপুরে আগামীকাল সিরিজের প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা। এই টেস্ট সামনে রেখে ১৬ অক্টোবর দুবাই থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েই ফেলেছিলেন সাকিব। তবে বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডারকে দেশে ফিরতে মানা করা হয়। পরে জানা হয়, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পরামর্শে সেটা করা হয়েছে।
সাকিবের দেশের মাঠে বিদায় নিতে না পারার ব্যাপারটা কীভাবে দেখছেন, টেস্ট পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে আজ জিজ্ঞেস করা হয় শান্তকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘কীভাবে দেখছি আসলে। আমি যেটা বললাম দুর্ভাগ্যজনক। হওয়া উচিত ছিল (দেশের মাঠে সাকিবের শেষ টেস্ট)। তবে আমরা সবাই জানি কেন হয়নি। তাই এটা নিয়ে টেস্ট ম্যাচের আগের দিন কথা এগোতে চাই না। আমি চাই আমার প্রত্যেক খেলোয়াড় ম্যাচে ফোকাস করুক।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানার কথা থাকলেও সেটা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে টেস্ট থেকে সাকিবের ‘ফেয়ারওয়েলের’ ব্যাপারে শান্তদের কোনো পরিকল্পনা ছিল কি না বা থাকলেও কি সেটা বাতিল—শান্ত তখন বলেন, ‘না (বাতিল করার ব্যাপারটা)। এটা তো অবশ্যই পরিকল্পনাতে ছিল। আমার মনে হয় বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। শুধু বাংলাদেশের কথা বলব না। বিশ্বেরই অন্যতম সেরা। তবে এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক (মিরপুর টেস্টে সাকিবের না থাকা)। যেকোনো কারণেই হয়নি। অবশ্যই এটা তো আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করি। প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ও মনে করে যে এটা পাওনা থেকেই গেল।’
২০০৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৭১ টেস্টে সাকিব করেন ৪৬০৯ রান। ৫ সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ৩১ ফিফটি। বাঁ হাতের ঘূর্ণি জাদুতে নিয়েছেন ২৪৬ উইকেট। এমন তারকা অলরাউন্ডার ছাড়া একাদশে সমন্বয় খুঁজে বের করতে বাংলাদেশকে স্বাভাবিকভাবেই বেগ পেতে হচ্ছে। টেস্ট পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্তও সেটা স্বীকার করেছেন, ‘অবশ্যই এখনো সমস্যা হচ্ছে দলের সমন্বয় মেলাতে। অস্বীকার করারও কিছু নেই। হয়তো এই জায়গাটা ঠিক করতে আমাদের বেশ কিছুদিন সময় লাগবে।’
টাইগার অধিনায়ক শান্ত বলেন, এরকম কোনো কিছুই না। আমি যেটা একটু আগে বললাম আগামীকালকে একটা টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে। আমরা সবাই জানি যে হ্যাঁ, উনি যদি এখান থেকে শেষ করতে পারতো, খুবই ভালো হতো। ফোকাসটা পরবর্তীতে সেই জায়গায় আনা হয়েছে কীভাবে আমরা টেস্ট ম্যাচটা জিততে পারি। এখন যত কথা বলব, এখান থেকে কোনো কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। কারণ আমরা সবাই জানি কেন উনি আসতে পারছেন না। এখন বর্তমান সময়ে যে অবস্থা, ফেসবুকে একটা করে স্ট্যাটাস দিলে সবকিছু সমাধান হয়ে যায়, চিন্তা করছি প্রতিদিন একটা করে আমিও স্ট্যাটাস দেব।
সাকিবের পরিবর্তে মিরপুর টেস্টের দলে নেওয়া হয়েছে হাসান মুরাদকে। ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার বাংলাদেশের জার্সিতে দুই টি-টোয়েন্টি এরই মধ্যে খেলেছেন। তবে সেটা ছিল গত বছরের এশিয়ান গেমস ক্রিকেটে। সাকিব না থাকায় স্পিন বোলিং অলরাউন্ডারের দায়িত্বটা নিঃসন্দেহে এখন মেহেদী হাসান মিরাজকেই সামলাতে হবে। শান্তর বিশ্বাস দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে সতীর্থরা তাঁদের সেরাটা দেবেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘এটা তো নিয়ন্ত্রণে নেই। এখানে আমাদের সেভাবেই মানিয়ে চলতে হবে। যে খেলোয়াড়েরা আছে, আমার মতে সবার সেই সামর্থ্য আছে যে যার জায়গা থেকে দায়িত্বটা পালন করবে। তাই আমি আশা করব যে সমন্বয়ে খেলবে, সবাই তার তার জায়গা থেকে শতভাগ দেবে।’