নগরীর খানজাহান আলী থানাধীন মশিয়ালী এলাকায় জাকারিয়া-জাফরিন-মিল্টন গ্রæপের সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে তিন জন নিহত ও পাঁচ জন জখমের মামলায় গ্রেফতার তিন আসামিকে আদালত পৃথক মেয়াদে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। গ্রেফতার হয়েছে চার জন। তবে, নৃশংসতায় ব্যবহার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয় নি।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছাত্রলীগের মহানগর কমিটি’র বহিষ্কৃত নেতা মোঃ জাফরিন শেখ (৩২), মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ (৩৫) এবং মোঃ আরমান শেখ (২০) কে রোববার আদালতে সোপর্দের পর তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মোঃ তরিকুল ইসলাম জাফরিনের আট দিন এবং অন্য দু’ আসামিকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আসামি জাফরিনকে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা, জাহাঙ্গীরকে যশোরের অভয়নগরের নোয়াপাড়া এলাকা এবং আরমানকে ফুলতলা উপজেলা এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। আরেক আসামি রহিম আকুঞ্জি (২২) কে বিকেএসপি বাইপাস এলাকা থেকে রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। নিহত সাইফুল ইসলামের পিতা শহিদুল শেখ শনিবার রাতে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-১৬ জনের বিরুদ্ধে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কেএমপি’র অতিঃ উপ-কমিশনার (সদর) কানাই লাল সরকার দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, তিন আসামির পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার ও খুন-জখমে ব্যবহার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের কয়েকজন ওই এলাকার একজনকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। এর কারণ জানতে গ্রামের কয়েকজন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে জাফরিনের বাড়ীর সামনে যায়। সেখানে জাকারিয়াসহ অন্যান্য আসামিরা উপস্থিত ছিল। কথা কাটা-কাটির এক পর্যায়ে জাফরিন এবং মিল্টন ঘর থেকে বন্দুক এনে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। গুলিবিদ্ধ মোঃ নজরুল ইসলাম (৬০) এবং গোলাম রসুল (৩০) কে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। সাইফুল ইসলাম (২২) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। গুলিতে জখম হওয়া পাঁচ জন খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের খানজাহান আলী থানা কমিটি’র বহিস্কৃত সহ-প্রচার সম্পাদক শেখ জাকারিয়া হোসেন জাকার এবং তার ভাই বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা শেখ জাফরিন হাসান ও অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি শেখ মিল্টন হাসান বাহিনীর সন্ত্রাসীরা বৃহস্পতিবার রাতে গুলি চালিয়ে কয়েক জনকে হতাহত করে। ঘটনার পরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জাকারিয়ার চাচাতো ভাই জিহাদ শেখ (৩৫) কে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে। তাদের বাড়ি-ঘর ও কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। একটি প্রাইভেট কার ও কয়েকটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়।