
হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল : নড়াইলের টেংরাখালি মেলা হাজার হাজার দর্শকের পদভারে মুখরিত। নড়াইল সদর উপজেলার সিংগাশোলপুর ইউনিয়নের বড়কুলা গ্রামের হাজরাতলায় বিগত ২ বছরের বেশি সময় ধরে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর মাঘ মাসের মাঘি পূণিমা তিথি’তে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
সে হিসেবে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আড়াই’শ বছরের ঐহিত্যবাহী টেংরাখালি হাজরাতলা মন্দির চত্বরে গিয়ে দেখা যায় হাজার হাজার দর্শক ভক্তরা সেখানে ভিড় করেছেন। নানা বয়সি নারী পুরুষ সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সেখানে ভিড় করেছেন। নানা ধরনের পশরা সাজিয়ে বসেছেন অসংখ্য দোকানি। রয়েছে নাগরদোলা, মিনি রেলগাড়ী সহ শিশুদের বিনোদনের নানা ধরনের অনুষঙ্গ। শুধু তাই নয় বাঁশ ও বেত এর নানা সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে নানা ধরনের তৈজষপত্র। কসমেটেক্্র সহ হরেক রকমের পণ্যসামগ্রীর দোকানে ভীড় করেছেন ক্রেতারা।
বড়কুলা গ্রামের বাসিন্দা অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, প্রতি বছর এতিহ্যবাহি এ মেলায় নড়াইল জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে জনসমাগম ঘটে। পার্শ্ববর্তী জেলা সমুহ ও ভারত থেকে অনেকে এ মেলা উপভোগ করতে আসেন। এ মেলার অন্যতম আকর্ষন হচ্ছে হাজরাতলা মন্দির। ভক্তরা মনোবাসনা পূরনের জন্য বিভিন্ন মানত করে। সেই মানত উৎসর্গ করতে প্রতি বছর এ দিনে ভক্তরা আসেন। আবার অনেকে আসেন রোগ মুক্তি ও বিপদ হতে মুক্তির আশায়। এ জায়গার প্রতি মানুষের অন্য রকম আস্থা বিশ্বাস ও ভক্তি রয়েছে।
মেলা চত্বরে আইন শৃংখলা পর্যবেক্ষনে থাকা শিক্ষক সৌমিত্র বিশ্বাস, রজত শুভ্র মল্লিকসহ অনেকে জানান,এলাকার সকল ধর্ম বর্ণের লোকজনের সহযোগিতা থাকায় এ মেলায় কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনা। তারপরও সকলের নিরাপত্তার জন্য সর্বদা সজাগ থাকতে হয়।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার বিশ্বাস প্রদীপ বলেন, প্রতি বছর মাঘ মাসের মাঘি পূণিমাতে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মাত্র একদিনের এ মেলা উপভোগ করতে প্রতি বছরই দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় হয়। এলকবাসির স্বতস্ফুর্ত সহযোগিতা থাকায় আজ পর্যন্ত এ মেলায় কোন প্রকার ঝামেলা হয়নি।
মন্দির কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উৎপলেন্দু বিশ্বাস বলেন, সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের বড়গাতী-বড়কুলা মৌজায় প্রায় ৫ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ধর্ম,বর্ণ,দল, মত নির্বিশেষে প্রায় সারা বছর দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে এখানে মানুষ আসেন। তবে এ মেলাকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার ভক্ত দর্শকরা আসেন। নিজের মনবাসনা পূরন,রোগ মুক্তি ও বিপদ হতে পরিত্রানের জন্য দান সদকা করেন। মন্দির কর্তৃপক্ষ সাধ্য অনুযায়ী আগতদের আপ্যায়ন করে থাকেন।