জন্মভূমি ডেস্ক : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নোয়গ্রাম ইউনিয়নের মাধভাটি গ্রামের দুই বন্ধু আব্দুল্লাহ আল মামুন জিকু এবং রুবায়েত ইসলাম টলিন শখের বশে করেছেন কুলের বাগান। লিজ নেওয়া প্রায় ১২০ শতাংশ জমিতে রোপণ করেছেন ৫ শতাধিক কুলের চারা। বাগানটিতে কাশ্মীরি, থাই, বলসুন্দরী ও সিডলেস কুলের এ বাগান দেখতে প্রায় নিয়মিত লোকজন ভিড় করছেন। আলোচিত এ কুলের বাগানটি লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের মাধবাটি গ্রামে। শখের বশে দুই বন্ধু কাশ্মীরি কুল, থাই, সিডলেস ও বলসুন্দরী জাতের পাঁচ শতাধিক চারা সাতক্ষীরা থেকে এনে রোপণ করেন। ফলনও ভালো হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১৪৮ হেক্টর জমিতে কুল চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে নড়াইল সদর উপজেলায় ৮৩ হেক্টর, লোহাগড়া উপজেলায় ৪০ এবং কালিয়া উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে। যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭১৫ মেট্রিকটন। এতে সদর উপজেলায় ৩৯০, লোহাগড়া উপজেলায় ১৯৮ ও কালিয়া উপজেলার ১২৭ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। রুবায়েত ইসলাম টলিন ঢাকা মেইলকে বলেন, বাগানে প্রায় পাঁচশত গাছ রয়েছে। বাগান করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। বাগান তৈরির শুরু থেকে আমি নিজে ও আমার বন্ধু জিকুকে নিয়ে বাগান পরিচর্যার কাজ করে যাচ্ছি। গাছের যত্ন নেওয়া এবং সঠিক সময় জৈব ও গোবর সারসহ কিছু রাসায়নিক সারও গাছের গোড়ায় দূরত্ব বজায় রেখে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রথমবারের মতো বাগান থেকে বরই সংগ্রহ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে প্রায় দেড়লাখ টাকার বিক্রি হয়েছে। এখনও প্রায় চার লাখ টাকার বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এতে করে আমাদের সব খরচ বাদ দিয়ে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে আশা করছি। আব্দুল্লাহ আল মামুন জিকু ঢাকা মেইলকে বলেন, কাশ্মীরি জাতের আপেল কুল খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারজুড়ে চাহিদা ব্যাপক থাকায় জমি থেকে পাইকারি ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাগান দেখতে আসা রাজু শেখ ঢাকা মেইলকে বলেন, বরই বাগানটি অনেক সুন্দর, এখানকার বরই অনেক মিষ্টি। প্রথম যখন বরই গাছ এখানে লাগিয়েছে, আমার তখন বিশ্বাস হয়নি এই গাছে বরই ধরবে। কিন্তু এখন এই গাছে অনেক বরই ধরেছে। দেখতে ও খেতে খুব ভালো লাগছে। আমাদের জেলায় এত বড় বরই বাগান নেই।
স্থানীয়দের কয়েকজন ঢাকা মেইলকে জানান, এই বাগান দেখে তারা অভিভূত। তাদের জমিতেও এই ধরনের কুল বাগান করবেন বলে জানান। এই কুল বাগানের কথা শুনে দেখতে এসেছেন তারা। আগামী বছর তারাও এখান থেকে কুলের চারা ও পরামর্শ নিয়ে কুলের চাষ করবেন বলে জানান। লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার ঢাকা মেইলকে জানান, লোহাগড়া উপজেলায় কাশ্মীরি কুলসহ বিভিন্ন জাতের কুলের আবাদ হচ্ছে। আকারে বড় ও সুস্বাদু কাশ্মীরি কুলের বেশ চাহিদা রয়েছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই কুল রোপণ ও চাষের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
নড়াইলে কুল চাষে দুই বন্ধুর বাজিমাত

Leave a comment