নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত রায়ের বিরূদ্ধে দু’টি বিদ্যালয়ের টিন, গাছ ও কাঠ চুরি করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ বহু অপকর্মের হোতা নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামের সুকান্ত রায় নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি অফিসের অধিনে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা পদে চাকুরী করলেও নিজেকে অনেক বড় অফিসার হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি প্রভাব খাটিয়ে এবং অনৈতিক ভাবে টাকা খরচ করে নিজ গ্রাম মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি করেছেন শ্বশুর বিমল বিশ্বাসকে এবং মালিয়াট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি করেছেন নিজ স্ত্রী ফোলরা রায় কে। এ কাজ করার পর বিদ্যালয় দু’টিকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের নিজের অধিনস্থ কর্মচারী মনে করছেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে যাচ্ছেতাই আচরন করেন। বন্ধের দিন ম্যানেজিং কমিটির মিটিং ডেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বিদ্যালয়ে আসতে বাধ্য করেন। তার শ্বশুর ও স্ত্রী নামে মাত্র সভাপতি। তিনি নিজেই সভাপতির চেয়ারে বসে মিটিং পরিচালনা করেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি এ দু’টি বিদ্যালয়ের ঘরের টিন মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করে পকেটস্থ করেছেন।
শেখহাটি ইউনিয়নের বাকলি গ্রামের ভাঙ্গাড়ি ক্রেতা সাগর জানান, কৃষি অফিসার সুকান্ত রায় তার নিকট মালিয়াটের দু’টি স্কুলের ঘরের চালার টিন খুলে বিক্রি করেছেন। কেজি দরে বিক্রি করলেও ওই টিন খুব ভালো ও ব্যবহারযোগ্য থাকায় তিনি বেশ লাভে বিক্রি করেছেন। এলাকার বাকলি গ্রামের শতদল গোস্বামীর নিকট বিক্রি করেছেন ২০ খানা টিন। আর বেশি ভালো টিনগুলো বাইরে বিক্রি করেছেন। তবে ১২৬৫ কেজি টিন তিনি মাত্র ৪৯ টাকা কেজি দরে কিনেছিলেন বলে জানান। প্রায় ১ মাস আগে বিদ্যালয়ের ৩টি মেহগিনি গাছ লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন গাছ চোর সুকান্ত রায়। স্থানীয়রা জানান পাকিস্তান আমলের অত্যন্ত ভালো মানের টিন নিজের ইচ্ছামত বিক্রি করে দিয়েছে সুকান্ত চুরা। সে কারো সাথে কোন আলাপ বা বিদ্যালয়ের কোন মিটিং ছাড়াই গাছ,কাঠ ও টিন চুরি করে বিক্রি করেছে। সম্প্রতি এ দু’টি বিদ্যালয়ে ৬টি পদে কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এভাবে অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থে সে মাদকাসক্ত সন্ত্রাসী লালন পালন করে। তার কারনে বিদ্যালয় দু’টি ধ্বংসের পথে। এলাকার সামাজিক অবক্ষয় চরম আকার ধারন করেছে। তার বিরূদ্ধে কোন তদন্ত আসলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে। এ জন্য তার অপকর্ম যুগ যুগ ধরে চলছে। এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মালতি পাঠক জানান,বিমল বিশ্বাস বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেও বিদ্যালয় পরিচালনা করেন সুকান্ত। ঘর সংস্কারের কথা বলে সুকান্ত টিনগুলো খুলে নেয়। এরপর বিক্রি করে দেয়। ছাত্র-ছাত্রীদের সাইকেল গ্যারেজ করার জন্য কিছু টিন রাখার জন্য অনুরোধ করলেও সে কোন কথা শোনেনি। এ ব্যাপারে সুকান্ত রায় বলেন, উভয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে টিনগুলি বিক্রি করে দেয়ার অনুরোধ করায়,তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে সময়ের অভাবে টাকা ফেরত দিতে পারেননি। আর শ্বশুর বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় এবং স্ত্রী ভালো বোঝে না, তাই তিনি বিদ্যালয়ের মঙ্গলার্থে একটু সাহায্য করেন।