
বিজ্ঞপ্তি : ২০১৪ সালের ১৭ মে প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর মামুনের উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র গণহত্যা জাদুঘর হিসেবে খুলনায় যাত্রা শুরু করে ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর; সংক্ষেপে যেটি গণহত্যা জাদুঘর নামেই পরিচিত।
গণহত্যা জাদুঘরের নবম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় নগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত গণহত্যা জাদুঘরের নতুন ভবনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই সভাতে সভাপতি ছিলেন গণহত্যা জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ড. মুনতাসীর মামুন। গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি ও উপদেষ্টাগণসহ শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এতে উপস্থিত হয়ে গণহত্যা জাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গণহত্যা জাদুঘর ট্রাস্টি স¤পাদক ড. চৌধুরী শহীদ কাদের।
খুলনায় স্থাপিত এই জাদুঘরটি বাংলাদেশের এবং দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র গণহত্যা জাদুঘর। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত ইতিহাসের ভয়াবহতম গণহত্যা-নির্যাতনের স্মৃতি আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। গণহত্যার বিভিন্ন নিদর্শন তুলে ধরার পাশাপাশি ‘গণহত্যা-নির্যাতন ও মক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র’ (সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রকল্প) এর মাধ্যমে গত ছয় বছর যাবত সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার গবেষণায় কাজ করা হচ্ছে; যার মধ্যে রয়েছে গণহত্যা, বধ্যভূমি, গণকবরের জেলা জরিপ, ফলক নির্মাণ, গণহত্যার ডিজিটাল ম্যাপ ইত্যাদি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় খুলনার সাউথ সেন্ট্রাল রোডে একটি দুইতলা বাড়িসহ জমি প্রদান করেন। বর্তমানে সেই ভবনটি ভেঙ্গে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে ৬ তলার অত্যাধুনিক জাদুঘর নির্মাণের প্রকল্প প্রায় শেষের পথে। এই বছরেই গণহত্যা জাদুঘর নতুন ভবনে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজকের আয়োজন নতুন ভবনে অনুষ্ঠিত প্রথম কোনো আয়োজন।
ড. মুনতাসীর মামুনকে সভাপতি করে শিল্পী হাশেম খানকে সহ-সভাপতি করে ১১ সদস্যের একটি ট্রাস্টি বোর্ডের অধীনে জাদুঘরটি পরিচালিত হয়। লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, কবি তারিক সুজাত, অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, কর্ণেল (অব.) সাজ্জাদ আলী জহির জহির, বীর প্রতীক, অধ্যাপক শংকর কুমার মল্লিক অধ্যাপক মোসাম্মৎ হোসনে আরা, অমল কুমার গাইন এ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। ড. চৌধুরী শহীদ কাদের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক।
ইতোমধ্যে রাশিয়া, ইউক্রেন, বসনিয়া ও বেলারুশের গণহত্যা জাদুঘর বাংলাদেশের এই জাদুঘরের সাথে যৌথভাবে কাজ করছেন। গণহত্যা-নির্যাতনের নানা স্মারকে একাত্তরের ভয়াবহতার নিদর্শন এই জাদুঘরটি বর্তমানে অস্থায়ীভাবে খুলনার সোনাডাঙ্গায় পরিচালিত হচ্ছে। আশা করা যায় এই বছরের মধ্যেই চলমান ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মতো গণহত্যা জাদুঘরও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি প্রদর্শনের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের শুরুতে সবার উপস্থিতিতে কেক কাটা হয়। উপস্থিত সবাই গণহত্যা জাদুঘরের সকল শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। গণহত্যা জাদুঘরের আগামী দিনের পথচলায় সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন। ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত ট্রাস্টিবৃন্দ সকলকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানান।