ডেস্ক রিপোর্ট : বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার নবপল্লী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টির নারীদের কথা ভেবে মরহুম এস এম বদরউদ্দিন বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ২০১০ সালের মে মাসে এমপিওভুক্ত হয়। কোড নং-৫৯০২১৬১২০৩। বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্ট শ্রেণীর বালিকাদের পড়ানো হয়। তিনটি শ্রেণীতে বর্তমানে ১২৫ জন শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। বিদ্যালয়ে ৭ জন শিক্ষক ও ৬ জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন।
কিন্তু প্রতিষ্ঠার ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও বিদ্যলায়টির চারপাশে কোন নিরাপত্তা প্রাচীর তৈরি হয়নি। এত বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন নিরাপত্তা প্রাচীর না হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে।
এছাড়া এই বিদ্যালয়ে কোন সীমানা প্রাচীর না থাকায় চুরি ও বহিরাগতদের প্রবেশের অহরহ ঘটনা ঘটছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণসহ বিভিন্ন দামি জিনিসপত্র ও অর্থ সংরক্ষণে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েই এসব জিনিসপত্র সংরক্ষণ করতে হয়।
শুধু সীমানা প্রাচীরের সমস্যা নয়, বিদ্যালয়টিতে বিশুদ্ধ পানীয় জলের কোন ব্যবস্থা নেই। শ্রেণীকক্ষে নেই সিংলিয়ের ব্যবস্থা। তাই এই প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে কম্পিউটার শিক্ষক থাকলেও বিদ্যালয়ে কোন কম্পিউটার নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল যুগেও কম্পিউটার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিদ্যালয়ে আজ পর্যন্ত কোন শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। স্যানিটেশন ব্যবস্থারও নাকাল অবস্থা। এছাড়া বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকসহ ৫ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারীর পদ খালী রয়েছে। সব মিলিয়ে নবপল্লী নি¤œ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় নানা সমস্যায় জর্জারিত।
নবপল্লী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাধ্যা মন্ডল, ফারজানা মেমী ও নুপুর বালা জানায়, তাদের বিদ্যালয়ে বেশ কয়েকবার চুরির ঘটনা ঘটেছে। চারপাশে কোন নিরাপত্তা দেয়াল না থাকায় অনেক সময় বাইরের আক্রমণাত্মক প্রাণীদের সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়া বিশুদ্ধ পানীয় জল না থাকায় এবং শ্রেণীকক্ষে সিংলিয়ের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের খুব কষ্ট ভোগ করতে হয়।
শিক্ষার্থী অভিভাবক মেহেদী হাসান মেহের, শিবদাস বালা ও পরিমল পান্ডে বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীর খুবই দরকার। এলাকায় চুরি ও কুকুরের উপদ্রব বেড়েই চলছে। সীমানা দেওয়াল না থাকায় ছাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিদ্যালয়টির দ্রæত সীমানা প্রাচীর নির্মানের দাবী জানাই।’
নবপল্লী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল আলম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সীমানা দেয়ালের জন্য আমরা অনেক আগেই আবেদন জমা দিয়েছি। কিন্তু এখনো কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সীমানা প্রাচীর ছাড়াও বিদ্যালয়ে নানা সমস্যা রয়েছে।’
নবপল্লী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মোস্তমাসুদ তালুকদার বলেন, ‘বিদ্যালয়টি বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জারিত। এটির উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি এ অঞ্চলের সমাজ সেবকদেরও এগিয়ে আসা উচিৎ।’
চিতলমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান বলেন, ‘এ উপজেলায় আমি অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। বিদ্যালয় প্রধানদের বলেছি কার কি সমস্যা লিখিত ভাবে জানাতে। তাঁরা জানালে আমি সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।’
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত