
জন্মভূমি ডেস্ক : নতুন সরকারের ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন খুলনা-৫ আসন থেকে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচিত সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ। এই নিয়ে তিনি দ্বিতীয় দফায় মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব নিলেন।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে শপথ নেন তিনি। নতুন মন্ত্রীদের শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শপথগ্রহণ শেষে নবনিযুক্ত মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্যদের মতো তিনিও নিজ শপথবাক্যে স্বাক্ষর করেন।
ফের মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের আমন্ত্রণ পাওয়ার পর নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘এটাকে অনেক বড় দায়িত্ব মনে হচ্ছে আমার কাছে। সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকার উন্নয়নে কাজ করার অনেক সুযোগ থাকে। আর মন্ত্রী হলে মানুষের সেবার সুযোগ আরও বেড়ে যায়। যে কোন কাজেরও গতিও বাড়ে।’
নিজের মন্ত্রিত্বকালীন সময়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যখন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম তখন এই সেক্টরে অনেক উন্নতি করেছি। মৎস্য উৎপাদন অনেক বেড়েছিল। গবাদি পশু ও গরুর দুধ উৎপাদনেও সফলতা এসেছিল। আমাকে যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হবে, আমি চেষ্টা করবো আগের থেকেও বেশি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার।’
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি মানুষকে ভালোবেসেছি সারাজীবন। মানুষকে ভালোবাসলে তা ফিরে পাওয়া যায়। মানুষ আমাকে ভালোবেসেছে বলেই আজ আমি সংসদ সদস্য হতে পেরেছি, আর প্রধানমন্ত্রী আমাকে মনোনয়ন দেয়ায় মানুষ আমাকে আবারও ভালোবাসার সুযোগ দিয়েছে। আমি মানুষের জন্য সর্বোচ্চটা ফিরয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো।’
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ২৫ জানুয়ারি ২০১৪ থেকে ২ জানুয়ারি ২০১৮ পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং ২ জানুয়ারি ২০১৮ থেকে ৭ জানুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নারায়ন চন্দ্র খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৯৪৫ সালের ১২ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম কালীপদ চন্দ ও মা’র নাম রেণুকা বালা চন্দ। নারায়ন চন্দ্র উলাগ্রামের পাঠশালায় তার শিক্ষাজীবন শুরু করে বান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৬১ সালে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক্যুলেশন পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে দৌলতপুর বিএল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৬৭ সালে একই বিষয়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। চাকরি করাকালীন সময়ে ১৯৭২ সালে তিনি বিএড পাস করেন।
ডুমুরিয়ার সাহস নোয়াকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন নারায়ন চন্দ্র চন্দ। ১৯৭৩ সালের ৭ মে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ২০০৫ সালের ১১ মার্চ চাকরি থেকে অবসর নেন।
নারায়ন চন্দ্র চন্দ ১৯৬৭ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৬৮ সালে আওয়ামী লীগের ডুমুরিয়া থানা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৮৪ সালে তিনি ডুমুরিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০০৩ সালে গঠিত কমিটিতেও তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা শাখার সদস্য। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ছিলেন।