
বিনা অনুমতিতে একাধিকবার ভারত ভ্রমণ
জন্মভূমি রিপোর্ট : নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলায় জামিনে মুক্তি প্রাপ্ত আসামী প্রাইমারী শিক্ষক কিরীটী রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল হয়েছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির দুইজন ছাত্রীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন পীড়নের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে খুলনা থানায় মামলা হয়। ঐ দিন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। তিনি নগরীর তালতলা উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। অভিযোগ পত্রের তথ্যানুযায়ী, গত ২১ সেপ্টেম্বর আসামী কিরীটী রায় চতুর্থ শ্রেণিতে ক্লাস নেয়ার সময় দুইজন ছাত্রীকে যৌন পীড়ন করেন। ঘটনাটি ভিকটিমদের অভিভাবকরা অন্যান্য শিক্ষক ও এলাকাবাসীদের জানান। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা আসামীর কাছে বিষয়টি জানতে স্কুলে আসেন এবং তাকে অবরুদ্ধ করে সাংবাদিকদের খবর দেন। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জননা তাকে মারধর করতে উদ্যত হয়। তখন সাংবদিকদের মাধ্যমে খবর পেয়ে খুলনা থানা পুলিশের টিম তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। তারপর খুলনা থানায় তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সালের ও সংশোধনী ২০০৩ সালের ১০ ধারায় মামলা হয়। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন।
ঐ দিন পুলিশ তাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞসাবাদ ও মোবাইল ফোন জব্দ করে অনেক তথ্য
উদ্ধার করে। তার মোবাইলে একই স্কুলের একজন সহকারী শিক্ষিকার সাথে ভারত ভ্রমণের মন্দির, হোটেলের ছবি ও অন্যান্য সহকারী শিক্ষিকাদের শরীরের স্পর্শকাতর অংশের অসংখ্য ছবি পাওয়া যায়। যা তিনি সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদে শিকার করেন। এদিকে কিরীটী রায়ের বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে ভারত ভ্রমণের অভিযোগ করেছেন একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মুক্তি বিশ^াস। গত ১২ নভেম্বর খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আমি ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে ভারতে যাই। তখন কিরীটী রায়ের সাথে আমার ভারতে দেখা হয়। এছাড়া কিরীটী রায় ৩ জুলাই থেকে ৭ জুলাই ২০২৩ সালে বিনা অনুমতিতে ভারত ভ্রমণ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন। মুক্তি বিশ^াস নিজেও বিনা অনুমতিতে ভারত ভ্রমণ করেছেন, এই তথ্য জানিয়েছেন তালতলা উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, আমার সোকজের জবাবে মুক্তি বিশ^াস বলেছেন, আমি কিরীটী রায়ের প্ররোচনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দুইবার বিনা অনুমতিতে ভারত ভ্রমণ করেছি। কিরীটী রায় স্কুল ছুটি পেলেই নিয়মিত ভারত ভ্রমণ করেন। আমি কিরীটী রায়ের শাস্তি চাই। এদিকে বিনা অনুমতিতে শরীরের স্পর্শকাতর অংশের অসংখ্য ছবি তোলার অভিযোগে প্রধান শিক্ষকসহ ৪ জন সহকারী শিক্ষক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, কিরীটী রায় আমাদের অনুমতি ছাড়া যে সব ছবি তার মোবাইলে তুলে রেখেছেন তা কোন ভদ্র মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে আমরা এর কোন বিচার পায়নি। এদিকে স্কুলের অভিভাবকরা এই শিক্ষককে অন্য স্কুলে বদলি করানোর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর আদেন করেছেন। এ বিষযে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম বলেন, অনুমতি ছাড়া কিরীটী রায় এবং মুক্তি বিশ^াস ভারত ভ্রমণ করেছেন এ বিষয়ে আমাদের কাছে সুস্পষ্ট তথ্য আছে। তাছাড়া তার মোবাইল ফোনে নারী শিক্ষকদের বিতর্কিত ছবি পাওয়া গেছে। যদিও কিরীটী রায়ের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা চলছে। তবুও অন্যান্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা তার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছি।