
জন্মভূমি ডেস্ক : মানুষ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সংঘাত-সংঘর্ষের হাত থেকে দেশবাসীকে রক্ষায় অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে নির্দলীয় তদারকি সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করার জন্য সরকার সহ সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
বুধবার (৮ নভেম্বর) পুরানা পল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানান জোটের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে আগামী ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন, আমিনুল হুদা টিটো দিবসে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঐ দিন ঢাকায় নূর হেসেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করে বলা হয়, একতরফা নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হলে ঐ দিনই বাম জোটের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে। একই সাথে পরদিন থেকে হরতাল-অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালনে জোটের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের গণতন্ত্রকামী জনগণকে প্রস্তুত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়। সভায় আগামী ১০ নভেম্বর থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী বাম জোটের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ। উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)’র সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদের (মার্কসবাদ) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হওয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব হয়ে পড়ছে। বরং নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার জনমত ও বিরোধী দলসমূহের দাবি উপেক্ষা কারে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। যা নির্বাচনের পরিবেশকে বিঘ্নিত করে নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।
আরো বলা হয়, নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার একটি অন্যতম উপাদান। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫২ বছর পরেও একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা শাসকশ্রেণি গড়ে তুলতে পারেনি। সেজন্যই প্রতি ৫ বছর অন্তর অন্তর ভোটের আগে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কম বেশি সংঘাত-সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এবারের পরিস্থিতি অনেক গভীর ও ভয়াবহ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নির্বাচন নিয়ে যে সংকট ও আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে শান্তিপূর্ণ উপায়ে তা নিরসনের উদ্যোগ না নিয়ে সরকার গ্রেপ্তার-দমনপীড়নের পথ বেছে নিয়ে একতরফা নির্বাচনের দিকে এগুচ্ছে যা দেশকে আরও গভীর সংকটে নিক্ষেপ করবে। একতরফাভাবে তপশিল ঘোষণা দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতকে অগণতান্ত্রিক পথে ঠেলে দেবে।
বাম গণতান্ত্রিক জোট সাম্রাজ্যবাদী ও মৌলবাদী শক্তির অপতৎপরায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশবাসীকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সতর্ক থাকা ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলসমূহকে বাইরে রেখে যে কোনোভাবে গায়ের জোরে একতরফা নির্বাচন করার অর্থ হবে রাজনৈতিক সহিংসতা জিইয়ে রাখা। এর ফলে অর্থনীতি, রাজনৈতিক পরিবেশ ও সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়ে সংঘাত ও সংঘর্ষ বৃদ্ধি পাবে।