
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই হেভিওয়েটসহ অনেক প্রার্থী কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ‘প্রথমবার’ লঙ্ঘনের কারণে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি প্রায় সবাইকে ‘সতর্ক’ করে দায়মুক্তির সুপারিশসহ নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। ইসি এবং নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন নির্বাচনে প্রায় একশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধিমালা লঙ্ঘনের বিভিন্ন অভিযোগ তদন্তাধীন বলে ইসিকে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। শোডাউনসহ মনোনয়নপত্র দাখিল, প্রচার চালানো, প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও সমর্থকদের হুমকি-ধামকি দিয়ে বক্তব্য দেওয়ার মতো অভিযোগের তদন্ত চলছে। আচরণবিধিমালা লঙ্ঘনের তালিকায় নতুন প্রার্থী ও সংসদ-সদস্য ছাড়াও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার ব্যক্তিও রয়েছেন। যদিও এসব অপরাধে সতর্ক করা ছাড়াও প্রার্থীকে জরিমানা করা, এমনকি প্রার্থিতা বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, যারা আগেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং জাতীয় সংসদে আইনপ্রণেতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের নির্বাচনি আচরণবিধি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকার কথা। এমন কার্যকলাপ আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে নিয়োজিত কমিশনকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে; জনগণের কাছে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে।
গত ১৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
নিয়ম অনুযায়ী তফশিল ঘোষণার পর থেকেই আচরণবিধির আওতায় পড়ে যান প্রার্থীরা। বাস্তবে নির্বাচনের প্রচার শুরুর দিন না আসা পর্যন্ত এখন যেভাবে পোস্টার-ব্যানার লাগানো হচ্ছে বা শোডাউন-মিছিল করে যাচ্ছেন প্রার্থীরা, এর সবই অবৈধ। মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ও মিছিল কিংবা শোডাউন করা যাবে না। আমাদের মতে, আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য শুধু নোটিশ প্রদানই যথেষ্ট নয়, বরং প্রমাণসাপেক্ষে বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণই কাম্য। এতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোটারদের আস্থাই শুধু যে বাড়বে তা নয়, কমিশন কঠোর হলে প্রার্থীরাও আইন মেনে চলতে বাধ্য হবেন, যা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন নির্বাচন প্রভাবমুক্ত থেকে সম্পন্ন করে এই কমিশন দেশবাসীর সামনে নজির স্থাপন করবে, এটাই প্রত্যাশা।