জন্মভূমি ডেস্ক : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উল্টাপাল্টা কথা না বলে অবিলম্বে নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ১২ দলীয় জোট। তা না হলে রাজপথে আন্দোলন আরও বেগবান হবে। সেইসঙ্গে দেশে অরাজকতা, অন্যায়, দুর্নীতি রুখতে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের অবিলম্বে অপসারণের আহ্বান জানান জোটের শীর্ষ নেতারা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। দেশবিরোধী অপতৎপরতা, সাবেক কাউন্সিলরদের পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জোট প্রধান জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহাসান হাবিব লিংকন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মুহাম্মদ ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের (পিএনপি), চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন, জাগপার প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুজ্জামান, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব ইমরুল কায়েস, লেবার পার্টির মহাসচিব আমিনুল ইসলাম ও কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবু হানিফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, গত জুলাই-আগস্টের চেয়ে কঠিন সময় পার করছি। আমাদের ঐক্য এবং সংগ্রামী চেতনায় কোথায় যেন চিড় ধরেছে। একটি অপতৎপরতা চলছে। যে হাসিনার বিদায়ের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে যাত্রা শুরু হয়েছে তাতে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আসছি। আমাদের আস্থা এখনো আছে। কিন্তু তারা প্রতিনিয়ত ভুল করছে। যে কারণে আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরেছে। আমরা ঐক্য এ সংগ্রামী চেতনা অটুট না থাকলে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের শত্রুরা বেশি খুশি হবে। আপনারা দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিলে জনতা সবচেয়ে বেশি খুশি হবে। তিনি বলেন, সচিবালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এর পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে।
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অধিকার আদায়ের কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জিত হয়েছে। এটি কারো একক কৃতিত্ব নয়। বাংলাদেশের মানুষ বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ৫ আগস্ট রাজপথে নেমে তাকে বিতাড়িত করেছে। আজকে একটি মহল ওই বিজয়কে নিজেদের বলে দাবি করছে। কিন্তু আমি সেটা মেনে নিতে পারিনা। কারণ বিগত ১৭টি বছর বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা খুনি হাসিনার সরকারের দ্বারা সীমাহীন জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, সচিবালয়ে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে। যাতে সচিবালয়ে থাকা নথিগুলো পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে বিচার করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আমরা অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। যাতে দেশবাসী ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবে। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদ হাঁটু ভাঙা এবং মাজা ভাঙা। তারা ব্যর্থ। তারা কোনো কথা বলতে পারেন না। তারা উল্টাপাল্টা কথা বললে আমরা বেশি দিন সহ্য করব না। প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন না দিলে আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামব। আমরা সিদ্ধান্ত নিলে ২৪ ঘণ্টাও টিকতে পারবেন না।
নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না হলে আন্দোলন: ১২ দলীয় জোট
Leave a comment