
গতকাল শনিবার থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ধরতে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সারাদেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে প্রতিটি থানার ওসিকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এমন অভিযান জরুরি। সাম্প্রতিককালে হরতাল, অবরোধে ব্যবহৃত পেট্রোলবোমা, অগ্নিসন্ত্রাস ইত্যাদি কার্যক্রম প্রতিরোধে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত ২২ মাসে পুলিশ দেশব্যাপী অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭ হাজার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।
নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের এই অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করা হচ্ছে। দেশের অন্তত ২৫টি সীমান্ত রুট দিয়ে ঢুকছে বিপুলসংখ্যক অবৈধ অস্ত্রের চালান। ভারত, মিয়ানমার হয়ে দেশে আসা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এসব অস্ত্র কারা আনছে; কীভাবে এবং কোথা থেকে আনা হচ্ছে, আর কারা এর ক্রেতা- এসব বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা, প্রচার-প্রচারণা নির্বিঘ্ন করতে এবং নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার হলেও জাতীয় নির্বাচনের আগে ভোটের মাঠের নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষমতা ধরে রাখতে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেশি দেখা যায়। আসন্ন নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার এবং বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
বৈধ অস্ত্র যাতে কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করা না হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনের সময় অস্ত্রধারীদের ‘কদর’ বাড়ে। অস্ত্রধারীদের বিচরণে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে ব্যাহত করে। সে জন্য অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও বৈধ অস্ত্র জমা নেয়ার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি, বৈধ-অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচনের সময় যেন কোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে না পারে, সে লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে।