
বিভিন্ন প্রকারের মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে এক শ্রেণির যুবকদের জীবন ধ্বংসের দিকে। এছাড়া অনেকেই কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন। কিশোর-কিশোরিদের মধ্যে এখন নেশায় জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা অনেক বেড়েছে। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। সব সংঘাত সংঘর্ষের চিরন্তন ও মহাসমন্বয় হচ্ছে ইসলাম। জীবনাদর্শ, জীবন ব্যবস্থা ও জীবন বিধান হিসেবে ইসলামে রয়েছে সব সমস্যার সঠিক সমাধান। এতে রয়েছে জন্ম হতে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি সমস্যার সমাধান আর মৃত্যুর পর আখেরাতের অনন্ত জীবনে নিশ্চিত সুখ-শান্তি লাভের উপায়।
শান্তিপূর্ণভাবে জীবনযাপনের জন্য আমাদের যা কিছু প্রয়োজন তাকে বৈধ করেছেন আর যা ক্ষতিকর তা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তেমনিভাবে মদ ও জুয়া মানুষের জন্য ক্ষতি ও ধ্বংস ছাড়া কিছুই বয়ে আনে না আর এ কারণেই আল্লাহ এই পাপ থেকে দূরে থাকার আদেশ করেছেন। জুয়াবাজি একটি ঘৃণিত ও গর্হিত কাজ। একটি মারাত্মক সামাজিক অপরাধ। জুয়াড়ির জীবন-সংসার কুরে কুরে বিনষ্ট হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে তা সম্পূর্ণ অবৈধ ও হারাম। এ ব্যাপারে কোনো আলেম দ্বিমত পোষণ করেননি।
ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে এবং মহানবি (সা.)-এর আগমনের সময় তৎকালীন মক্কায় নানা ধরনের জুয়ার প্রচলন ছিল এবং মদ ও জুয়ায় তারা মত্ত থাকত। কোরআনে মদ ও জুয়াকে ঘৃণ্য বস্তু এবং শয়তানের কাজ বলা হয়েছে। এগুলো থেকে দূরে থাকার আদেশ দেওয়া হয়েছে। মদ-জুয়ার মাধ্যমে পরস্পর শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়। উপরন্তু এগুলোর মাধ্যমে শয়তান মানুষকে নামাজ ও আল্লাহতায়ালার স্মরণ থেকে বিমুখ রাখে। মদ-জুয়া হারাম হওয়ার বিষয়টি অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই।
বর্তমান সমাজে লটারি, হাউজি, বাজি ধরা, চাক্কি ঘোরানো, রিং নিক্ষেপ প্রভৃতি নামে নানা ধরনের জুয়ার প্রচলন রয়েছে। এগুলো কখনও মানুষের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। জুয়ার যাবতীয় প্রক্রিয়াকে হারাম এবং নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করে। তুমি বল এ দুটোতে রয়েছে মহাপাপ’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২১৯)। এ বিষয়ে হাদিসে উল্লেখ আছে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত মহানবি (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা মদ, জুয়া ও বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন’ (বায়হাকি ও মিশকাত)।
মাদক দ্রব্য ও জুয়ার মাধ্যমে শয়তান তোমাদের মাঝে কেবল শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে এবং আল্লাহকে স্মরণ করা ও নামাজ থেকে তোমাদের বিরত রাখতে চায়। অতএব তোমরা কি এসব থেকে বিরত হবে?’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৯০-৯১) আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, জুয়ায় অংশগ্রহণকারী, খোটাদাতা ও মদ্যপায়ী জান্নাতে যাবে না’ (দারেমি ও মিশকাত)।