জন্মভূমি ডেস্ক : নোয়াখালীর ছয়টি আসনেই বাজিমাৎ করেছেন নৌকার প্রার্থীরা। তবে কোথাও হেসে খেলে আবার কোথাও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। রোববার (৭ জানুয়ারি) রাতে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর মধ্যে নোয়াখালী- ১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনে এইচ এম ইব্রাহিম, নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনে মোরশেদ আলম, নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) মামুনুর রশিদ কিরন, নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী, নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) ওবায়দুল কাদের ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে মোহাম্মদ আলী নির্বাচিত হয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী- ১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনে ১২৯ কেন্দ্রের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এইচ এম ইব্রাহিম ১ লাখ ৫৯ হাজার ২৯১ ভোট পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একেএম সেলিম ভূঁইয়া (ফুলের মালা প্রতীক) পেয়েছেন ২ হাজার ৮১৯ ভোট। এই হিসেবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন এইচ এম ইব্রাহিম। মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ২১০টি, বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৫৪ টি, সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৪টি এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার হলো ৪৪ দশমিম ৮৯ শতাংশ।
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনে ১১৮ কেন্দ্রের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলম ৫৬ হাজার ১৮৬টি ভোট পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহা. আতাউর রহমান ভুইয়া মানিক (ট্রাক প্রতীক) পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮৬৩ ভোট। এই হিসেবে মোরশেদ আলম ৩ হাজার ৩২৩ ভোটে আতাউর রহমান ভুইয়া মানিককে পরাজিত করেছেন। এ আসনে মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ছিল এক লাখ ১০ হাজার ৭০৩টি, বাতিল হওয়া ভোটের সংখ্যা তিন হাজার ৩২৬টি, সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা এক লাখ ১৪ হাজার ২৯টি এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার হলো ৩১ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে ১৪৯ কেন্দ্রের মধ্যে ৫৬ হাজার ৪৩৭ ভোট পেয়ে টানা তৃতীয়বার নির্বাচনে জয় লাভ করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিনহাজ আহমেদ জাভেদ (ট্রাক প্রতীক) পেয়েছেন ৫১ হাজার ৮৮৫ ভোট। এই হিসেবে মামুনুর রশিদ কিরন ৪ হাজার ৫৫২ ভোটে মিনহাজ আহমেদ জাভেদকে পরাজিত করেছেন।
নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনে চতুর্থবার নির্বাচনে জয় লাভ করলেন মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। ১৯৬ কেন্দ্রের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী ভোট পেয়েছেন এক লাখ ২৮ হাজার ৭৬৪ টি । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিহাব উদ্দিন শাহিন (ট্রাক প্রতীক) পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৫৭৩ ভোট। এই হিসেবে মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী ৮১ হাজার ১৯১ ভোটে শিহাব উদ্দিন শাহিনকে পরাজিত করেছেন।
নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ নিয়ে পাঁচবারের মতো আইন প্রণেতা হলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের ১৩২ কেন্দ্রে পেয়েছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ২৭৯ ভোট। অপরদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খাজা তানভীর আহমেদ (লাঙ্গল) পেয়েছেন ৯ হাজার ৭০২ ভোট। এই হিসেুবে ওবায়দুল কাদের প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার ভোটে খাজা তানভীর আহমেদকে পরাজিত করেছেন।
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী। আওয়ামী লীগ মনোনীত এ প্রার্থী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৭১৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মুশফিকুর রহমান লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৩৩ ভোট।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই ভোটে দু–একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তেমন কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। নোয়াখালীর সব থেকে বেশি ভোটগ্রহণ হয়েছে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে। হাতিয়ায় ভোটের শতকরা হার হলো ৬৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। সব মিলিয়ে মানুষ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়েছেন। গতকাল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সজাগ দৃষ্টি ছিল আজও থাকবে। আমরা নজরদারি রাখবো কোথায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।