শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। বিগত নির্বাচনে দেয়া ইসতেহারের কার্যক্রম শেষের পথে রয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক আজ বেলা বারটায় খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন ইসতেহার ঘোষণা করবেন। নতুন ইসতেহারে কি থাকছে চমক এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। বিগত নির্বাচনের ইসতেহারে নগর থেকে জলাবদ্ধতা নিরসন করার প্রতিশ্রুতি প্রাধান্য পায়।
২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিটি কর্পোরেশনের সফল মেয়র হিসেবে তালুকদার আব্দুল খালেক দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পুরণের অঙ্গিকার এবং তিলত্তমা খুলনা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে শুরু হওয়া কাজ এখনও চলমান রয়েছে। তার প্রথম এবং প্রধান নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিল নগরী থেকে জলাবদ্ধতা নিরসন করা। সে প্রতিশ্রুতি পূরণে তিনি নগরীতে ড্রেন খুঁড়ার কাজে হাত দেন। তার পরেই দৃষ্টি দেন ময়ূর নদীর দিকে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। পরীক্ষিত এবং সফল মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর শপথ গ্রহণের আগেই ১ হাজার ৪৫১ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে পেয়ে যান। তার দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির প্রথম শর্ত ছিল ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও রাস্তার উন্নয়নে তিনি কাজ করবেন। তাছাড়া ময়ূর নদী সংস্কার, ওয়াসার পানি নিশ্চিত করা, অবৈধ্য স্থাপনা উচ্ছেদসহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মসূচি হাতে নেয়ার প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করেন।
কেসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান জানান, ২০১৮ সালের ২৭ জুন মন্ত্রণালয়ে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প জমা দেয়া হয়ে ছিল। প্রকল্প জমা দেয়ার সময় মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক নিজেই উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্প জমা দেয়ার মাত্র ছয় দিন পর অভ্যন্তরীণ যাচাই বাছাই কমিটির সভা আহবান করা হয়। কোন ধরণের কাট ছাট না করে প্রকল্প দু’টি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। আর তখন থেকেই তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পুরণের কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়।
কেসিসির ইতিহাসে এ দু’টিই বৃহত্তম প্রকল্প। তালুকদার আব্দুল খালেক প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প পেয়েছিলেন। এ প্রকল্প দু’টির বিস্তারিত তুলে ধরে কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো: সাহাবুল আলম জানান, দু’টি প্রকল্পের মাধ্যমে কেসিসি’র জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮৪৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ৬০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত রাস্তা গুলি মেরামত এবং উন্নয়ন করার কাজ ৮০ শতাংশের বেশী শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
প্রধান প্রকৌশলী মো: মনজুরুল ইসলাম বলেন, সড়ক মেরামত প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫১৩টি এবং কেন্দ্রীয় ভাবে ৬০টিসহ ৫৭৩টি সড়ক মেরামত করার কাজ চলছে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে ময়ূর নদীসহ গুরুত্বপূর্ণ খাল খনন করে পাড় বাঁধাই, পানি নিস্কাশনে আটটি স্লুইচ গেট পুন:নির্মাণ, নয়টি প্রধান সড়কের দু’পাশে ৬২ কিলোমিটার বড় ড্রেন এবং ১২৮ কিলোমিটার এলাকায় ছোট ড্রেন নির্মাণ কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়া ময়ূর নদীর ওপর তিনটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
নির্বাচনের পর নতুন নগর পিতার কাছে নগরবাসীর প্রত্যাশা নিয়ে নাগরীক নেতা শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন: মেয়র নির্বাচিত হয়ে প্রথমেই তিনি অসমাপ্ত কাজের প্রতি নজর দিবেন। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা দূর করার যে কাজ চলছে তার সমাপ্তি টানবেন। শক্ত হাতে কাজ করে খুলনাকে তিলত্তমা নগরীতে পরিণত করবেন।
নারী নেত্রীএডভোকেট শামীমা সুলতানা শিলু বলেন: যিনি মেয়র নির্বাচিত হবেন তিনি অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করার দিকে নজর দিবেন। নগরী থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবেন। মাহেন্দ্র ইজিবাইক এবং মটর চালিত রিক্্রা নিয়ন্ত্রণে এনে নগরবাসীকে যানজটের বিড়ম্বনা থেকে রেহাই দিবেন।
নৌকা প্রতীক প্রার্থীর নতুন ইসতেহার জারি আজ
Leave a comment