জন্মভূমি ডেস্ক : শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বি-২০২৪ ব্যাচের ৪৪০ জন নবীন নাবিকের বুটক্যাম্প প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার (১ ডিসেম্বর) পটুয়াখালীর বানৌজা শের-ই-বাংলা প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্যারেড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।
পরে তিনি কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী নবীন নাবিকদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। আইএসপিআর জানায়, নৌবাহিনীর বি-২০২৪ ব্যাচের নবীন নাবিকদের মধ্যে মো. এ কে এম শাহাদত হোসেন সাদী পেশাগত ও সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ ফল অর্জন করে সেরা চৌকস নাবিক হিসেবে ‘নৌপ্রধান পদক’ লাভ করেন। মো. শাহীনুর আলম শিমুল দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ‘কমখুল পদক’ এবং সাব্বির রহমান তৃতীয় স্থান অধিকার করে ‘শের-ই-বাংলা পদক’ অর্জন করেন।
নৌবাহিনী প্রধান নবীন নাবিকদের উদ্দেশে তার ভাষণে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নৌ কমান্ডোদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে স্মরণ করেন জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদকে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উত্তরোত্তর উন্নয়নে ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে নৌবাহিনীকে যুগোপযোগী এবং প্রযুক্তি সম্পন্ন নৌবাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে, যা দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সমুদ্রভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। একটি সক্ষম ও শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নৌবহরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, স্পেশাল ফোর্স, হেলিকপ্টার, এমপিএ ও সাবমেরিন যুক্ত হয়েছে এবং কমিশনিং করা হয়েছে একাধিক নৌ ঘাঁটি। সক্ষমতা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ একটি আধুনিক ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী।
এছাড়াও ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন নতুন ঘাঁটি, উন্নততর জাহাজ, আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নৌবাহিনীর দক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিপইয়ার্ডসমূহ নিজস্ব প্রযুক্তিতে জাহাজ নির্মাণ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত পাঁচটি প্যাট্রোল ক্রাফট ইতোমধ্যে নৌবহরে সংযুক্ত হয়েছে।
বর্তমান বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি যুগোপযোগী নৌবাহিনী গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন চৌকস ও প্রশিক্ষিত নাবিক। নৌবাহিনীর উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে নৌবাহিনী প্রধান নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদের যোগ্য নাবিক হিসেবে গড়ে তোলার এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান।
পেশা হিসেবে দেশ সেবা ও দেশ গড়ার পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেওয়ায় নৌবাহিনী প্রধান নবীন নাবিকদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সেই সঙ্গে আজকের নবীন নাবিকরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সুবিশাল সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি নতুন বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী সদর দপ্তরের পিএসও, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, পটুয়াখালী, বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং নবীন নাবিকদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।