
জন্মভূমি রিপোর্ট
আগামী ২৫ জুন যানবাহন চলাচলের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হবে। ওইদিন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা বহুমুখি সেতুর উদ্বোধন করবেন।
দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পদ্মা সেতু উদ্ধোধনের দিন ক্ষন গণনা শুরু করেছে। এ উপলক্ষে দৈনিক জন্মভ‚মির পক্ষ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হবে। আজ প্রকাশিত হলো খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আকতারুজ্জামান বাবুর প্রতিক্রিয়া।
তিনি প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে জন্মভ‚মিকে বলেন, পদ্মা সেতু পার হতে গিয়ে আমি চারবার ঝড়ের কবলে পড়ি। তা হলো ২০০৯, ২০১২, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে। ২০১৮ সালে ঝড়টা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। ওইদিন আমরা ঢাকা থেকে ফিরছিলাম। পদ্মা ঘাটে আসলে লঞ্চ ফেরি কিছু না পেয়ে আমরা ট্রলারে উঠে পড়ি। তখন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বাজে। ট্রলারে উঠলেই ঝড় শুরু হয়। কিছুক্ষন পরেই ট্রলারের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ট্রলারের মাঝি অন্য ট্রলারকে কল দেয়ার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি। কারণ মোবাইলে কাজ করতে ছিল না। এরপরে সারারাতে আমরা তীর খুজে পাইনি। ভোরাতে একটা বাগানের ভেতওে ঢুকে পড়ি। এ সময় জেলেদের মাছ ধরতে দেখতে পাই। হয়তোবা চিরতরে পদ্মা ফেরি হারিয়ে যাবে। ফিরে আসছে পদ্মা সেতু। নতুন নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হবে। ভ‚লে যেতে হবে পূরনো স্মৃতি। তবে এ রাতের কথা কোনদিনই ভ‚লবোনা।
তিনি প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আরও বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনই নয়, বৈচিত্র আসবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবহন ব্যয়সহ বিভিন্ন খাতে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে একদিকে যেমন দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি যোগসূত্র তৈরি হবে, ঠিক তেমনি এই সেতু ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলে নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। তবে পদ্মা সেতুর কারণে সবচেয়ে বেশি সুবিধা হবে আমার উপক‚লীয় এলাকা কয়রা-পাইকগাছার কৃষিজাত পণ্যের বাজারজাতকরণে পরিবহনের ক্ষেত্রে। সেতুর কারণে কৃষক তার পণ্যের সঠিক মূল্য পাবেন। পচে যাবে না কোন মাছ।
সময় মতো ফেরি না পাওয়ায় বা পদ্মা পার না হতে পারায় নানা বিপাকে পড়েন কৃষকরা। পাশাপাশি কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, অনেক সময় ফেরি বন্ধ থাকে। তাই তাঁদের কৃষিজাত পণ্য বাজারজাত করতে সমস্যা হয়। অনেক সময় বাজারজাত করতে না পারার কারণে কৃষিজাত পণ্য পচে যায়। এ ধরনের ক্ষতি থেকে চিরতরে মুক্তি মিলছে উপক‚লবাসীর।