হোটেলে ছিট মিলছে না
বাংলাদেশী টাকার মান কমেছে
শেখ আব্দুল হামিদ
দীর্ঘদিনের লালায়িত স্বপ্ন পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর মধ্যদিয়ে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল ছাড়াও ভারতের কোলকাতায় এর প্রভাব পড়েছে। পর্যাটকদের ভিড়ে হোটেল পাড়ায় সিট পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে। একই সাথে বাংলাদেশী টাকার মান শতকে তিন টাকা কমে গেছে। ঢাকা কোলকাতা সরাসরি বাস চালু হওয়ায় পর্যটকরা ভিড় করছে কোলকাতার বিভিন্ন জায়গায়। চিকিৎসা ছাড়াও দর্শনীয় স্থান ঘুরতে মানুষ এখন কোলকাতা অভিমুখী হয়ে উঠেছে। পদ্মাব্রিজ চালুর পূর্বে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় হাজার লোক প্রবেশ করেছে। এখন প্রতিদিন দশ থেকে বার হাজার মানুষ এ পথে কোলকাতায় প্রবেশ করছে।
কোলকাতা থেকে ফিরে বটিয়াঘাটার প্রহ্লাদ চন্দ্র মন্ডল, পরিতোষ কুন্ডু, আজিজুর রহমানসহ অনেকেই জানান, কোলকাতা নিউমার্কেট এলাকা, টালিগঞ্জ, দমদম, হাওড়া, বশিরহাটসহ বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশী পর্যটক এবং রোগীদের ভিড়ে হোটেলে ছিট পাওয়া যাচ্ছে না। শহর থেকে বেশ দূরে গিয়ে থাকতে হয়। তাছাড়া কোলকাতা নিউমার্কেটে যেন উপচেপড়া ভিড়। বেনাপোল সীমান্ত পার হয়ে ওপার গিয়ে বাংলাদেশের ১০০ টাকা দিলে ভারতের ৭৮ টাকা পাওয়া যাচ্ছে। তারা বলেন পদ্মাব্রিজ চালুর আগে ১০০ টাকায় ৮১ টাকা পাওয়া গেছে। তাছাড়া এখন অনেক ভিড় হওয়ায় মানিচেঞ্জ করতেও বেশ সময় লাগছে।
জলমা এলাকার অনিমেষ মিস্ত্রী বলেন, তিনি গত এক সপ্তাহ আগে কোলকাতায় চিকিৎসা করাতে যান। এখন যে কোন হাসপাতালে পূর্বের তুলনায় রোগীদের ভিড় বেড়েছে। বাংলাদেশী রোগীদের ভিড়ে থাকার জায়গাও পাওয়া দুস্কর হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানেও প্রচুর লোকসমাগম দেখা গেছে। সবমিলিয়ে পদ্মা সেতু চালুর পর ধীরে ধীরে এর প্রভাব কোলকাতায় পড়তে শুরু করেছে।
গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়। ঠিক তার একদিন পর এর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। খুশিতে আত্মহারা হয়ে ওঠে খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর ও নড়াইল অঞ্চলের মানুষ।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতর খুলনা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর ফলে যশোর থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ১৫৭ কিলোমিটার, বেনাপোল থেকে ঢাকার দূরত্ব ১৯৩ কিলোমিটার এবং নড়াইল থেকে ঢাকার দূরত্ব ১২৭ কিলোমিটার হলো। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে যশোর, বেনাপোল, নড়াইল, খুলনা, ঢাকাসহ আশেপাশের জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়ে গেল। এ সেততু চালুর ফলে ঢাকা থেকে যশোর, বেনাপোল, কোলকাতাসহ অন্যান্য জেলায় কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার দেড়শ কিলোমিটার কমে গেছে। এছাড়া শিল্প শহর যশোরের নওয়াপাড়া এবং সাতক্ষীরা স্থলবন্দরের যোগাযোগ সহজ হয়েছে। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগের সহজতর পথ এ রুট। উৎসব আর ছুটির দিনে ঘাটে বাড়ে মানুষের চাপ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে বসে থাকার বিড়ম্বনা দুর হলো।
পদ্মা সেতুর প্রভাব কোলকাতায়
Leave a comment