পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল : পাইকগাছায় উপজেলার রাড়ুলীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যাঙের ছাতার মত অবৈধ গভীর নলকূপের ব্যবহার বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই কেউ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে ফাঁকি দিয়ে, কেউ মাধ্যম দিয়ে যোগ করে, কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য অবৈধভাবে নেওয়া সংযোগে ভূ-গর্ভস্থ হতে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে করে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ পড়ে, সঙ্গে সঙ্গে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
গত রোববার উপজেলার রাড়ুলী, হরিঢালী বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আবাসিক মিটার হতে নলকূপের মটরে অবৈধভাবে পার্শ্ব সংযোগ নিয়ে সেচ কার্য পরিচালনা করেছে। কোথাও বাড়ি থেকে লাইন টেনে রাস্তার উপর দিয়ে, কোথাও বাগান, মাঠের মধ্য দিয়ে দূরে নিয়ে যাচ্ছে। যাহা সম্পূর্ণ সেচ নীতিমালা বহি:র্ভুত, অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পার্শ্ব সংযোগ থাকার কারণে যেকোন সময়ে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যান-মালের ক্ষতি হতে পারে। ইতোমধ্যে রাড়ুলী ইউনিয়নে প্বার্শ সংযোগে বিদ্যুৎ দিয়ে মটর চালাতে গিয়ে খলিল গাজী নামে একজন মারা যান। তার বাড়ি ভবানীপুর গ্রামে। আবার অনেকে বহু টাকা খরচ করে বৈধভাবে বা নীতিমালা মেনে সেচকার্য পরিচালনা করছেন। অনেকেই কোন নিয়মনীতি না মেনে ইচ্ছা মত গভীর নলকূপ বসিয়ে, পার্শ্ব সংযোগ নিয়ে সেচ কার্য পরিচালনা করেছেন। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৈধ সেচ চাষীরা। এব্যাপারে বৈধ সেচ চাষী রাড়ুলী ইউনিয়নের একই গ্রামের কছিম উদ্দিনের ছেলে আলাল সরদার জানান, গয়না, গোয়ালের গরু, গাছ-গাছালী বিক্রয় করে অনেক কষ্টে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে ট্রান্সফরমার কিনে খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে পরিক্ষা করেছি। ডিপোজিট ওয়ার্কের আওতায় সমুদয় অর্থ বহন করে সেচ সংযোগ নিয়েছি। অথচ
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একটি পানি সেচের গভীর নলকূপ থেকে আরেকটি পানি সেচের নলকূপ স্থাপনের দূরত্ব ১৭শ’ ফুট হওয়ার কথা থাকলেও প্রতিবেশী মঈনুর রহমান নীতিমালা উপেক্ষা করে গভীর নলকূপ স্থাপন করেন। বিদ্যুৎ সংযোগ মিটার না নিয়ে তিনি তার নিজের বাড়ির আবাসিক সংযোগ থেকে অবৈধ লাইন টেনে সেচকার্য পরিচালনা করছেন। তারা নিজ জমি বাদেও অন্য জমিতে ব্যবসায়ী স্বার্থে পানি দিচ্ছে। কোন মতে স্ত্রী, ছেলেপুলে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। এখন আশেপাশে অবৈধ ভাবে সেচ পাম্পে সংযোগ দিয়ে পানি উত্তোলন করে ব্যবসা করায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির লোকদের জানালে তারা গুরুত্ব দেয় না। এব্যাপারে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম রেজায়েত আলী বলেন, তারা অনিয়মিত ভাবে করছে তাদের বলব অফিসে এসে আবেদন করে নিয়মিত করেন। না হলে অভিযোগ পেলে বা জানতে পারলে প্রচলিত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিএডিসি’র উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, যত্রতত্র সরকারি নীতিমালা বহি:র্ভুত গভীর-অগভীর নলকূপ বসানো যাবে না। একটা অপরাধ। আবার সেটাতে অরক্ষিত ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া আরেক টা অপরাধ। যদি কাহারোর সেচ সংযোগ এর প্রয়োজন হলে নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে। ডিজিএম পল্লীবিদ্যুৎকে এব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।