
পূর্ণ চন্দ্র মন্ডল, পাইকগাছা : পাইকগাছায় বোয়লিয়া শ্মশানে যাওয়ার পাকা রাস্তাটি রাতের আধারে মাটি দিয়ে উঁচু করে কাঁচা রাস্তায় পরিণত করার অভিযোগ উঠেছে ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে। পাশে পুরাইকাটিতে অবস্থিত ফাইভ স্টার ব্রিকস্ ইটভাটার ট্রলিসহ যানবাহন চলাচলের স্বার্থে শ্মশানে যাওয়ার পাকা রাস্তাটিতে মাটি দিয়ে কাঁচা রাস্তা তৈরি করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পাকা রাস্তার উপর মাটির কাঁচা রস্তা তৈরি করায় এবড়ো-খেবড়ো মাটি ও বুস্টিতে কাদা মাটিতে চলাচল করতে ব্যাপক অসুবিধায় পড়েছে শ্মশানে যাওয়া শবযাত্রী ও নদের পাড়ের জেলে পরিবারগেুলো। পাকা রাস্তা মাটি দিয়ে কাঁচা করায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। এর উপর বৃষ্টির পানিতে কাদায় পরিনত হয়। ফলে যান চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেটে চলারও সম্পুর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে ক্ষোভে ফুসে উঠছে ভুক্তভোগীরা। পাকা রাস্তাটি নিরাপদ যাতায়াতের পরিবর্তে মাটির রাস্তা করায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তারা রাতের আধারে পাকা রাস্তাটি কাঁচা রাস্তা তৈরি করায় ইটভাটা মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ রাস্তাটি পাকা করার দাবি জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের কাছে।
জানা গেছে, পাইকগাছার বোয়ালিয়া মহাশ্মশানটি কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত। কপোতাক্ষ নদের উপর ব্রীজ ও সংযোগ সড়ক তৈরি হওয়ার পরে শ্মশানে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। শ্মশানে যাওয়ার কোন পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে শবযাত্রীরা বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারের ভিতর দিয়ে যাওয়া-আসা করতে থাকে। এ অবস্থায় স্থানীয় সনাতন ধর্মালম্বীরা ফার্মের শরণাপন্ন হলে ফার্ম কর্তৃপক্ষ মানবিক কারণে ব্রীজের পাশ দিয়ে শ্মশানে যাওয়া জন্য রাস্তা তৈরি করে দেয়। পরে সরকারি অর্থে রাস্তাটি আরসিসি ঢালাই করা হয়। রাস্তাটি ফার্ম কর্তৃপক্ষ ও শ্মশান কমিটির নিয়ন্ত্রণে দেখভাল করা হয়।
বোয়ালিয়া মহাশ্মশান কমিটির সভাপতি শ্যাম সুন্দর ভদ্র বলেন, পাকা রাস্তার উপর মাটি দিয়ে ভরাট করার বিষয় আমাকে কেউ কিছু জানাইনি। তবে জানতে পেরেছি পাশের ইটভাটা মালিক অ্যাড. মুজিবুর রহমান তার ভাটার ট্রলি চলাচলের জন্য এ কাজটি করেছে।
ফাইভ স্টার ব্রিকস্ এর মালিক অ্যাড. মুজিবুর রহমান বলেন, পুরাইকাটি গ্রামের ভিতরের রাস্তার চাপ কমানোর জন্য আমরা ২টি ভাটা মিলে শ্মশানের সড়কটিতে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা মাটি ফেলে উঁচু করেছি। তবে বেড়িবাঁধ ও শ্মশানের যাওয়ার রাস্তার উপর দিয়ে যানবাহন চলাচলে ফার্মের ম্যানেজার বাঁধা সৃষ্টি করছেন। আমাদের যানযাবহন যাতে চলতে না পারে তার জন্য তিনি গাছ পুতে দিয়েছেন। তবে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন অনুমতি না নিয়ে পাকা রাস্তার উপরে মাটি ফেলে কাঁচা রাস্তা তৈরী করেছেন। রাস্তার ক্ষতি হলে আমরা মাটি দিয়ে ঠিক করে দেবো। আমাদের ট্রলি চলতে না দিলে শ্মশানে যাওয়া রাস্তার উপর যে মাটি ফেলেছি প্রয়োজন হলে তা আমরা কেটে তুলে নিয়ে আসবো।
স্থানীয় জেলে পরিবার, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ও শ্মশান কমিটির নেতৃবৃন্দ শ্মশানে যাওয়া পাকা রাস্তাটি মাটি দিয়ে কাঁচা করায় ভাটা মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।