ডেস্ক রিপোর্ট : আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক শহরে গতকাল বিকেলের দিকে যে অভিযান চালিয়েছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী, তাতে বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২০ হাজার পরিবার। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ।
কান্দাহার প্রাদেশিক প্রশাসনের শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিভাগের উপপ্রধান নেয়ামতউল্লাহ ওলফাত তোলো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, “ঘনবসতিপূর্ণ স্পিন বোলদাক শহরে নির্মমভাবে বোমাবর্ষণ করেছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। এতে অন্তত ২০ হাজার পরিবার তাদের বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বাস্তুচ্যুতদের সহায়তার জন্য আমরা কাজ করছি।”
কান্দাহারের স্পিন বোলদাক শহরটি পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে। গত ১১ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত সংঘাত, হামলা-পাল্টা হামলার পর ১৫ অক্টোবর থেকে ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী। সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয় গত শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১ টার দিকে।
বিরতি শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আফগানিস্তানের দুই প্রদেশে কান্দাহার ও পাকতিকায় হামলা চালায় পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। হামলায় কান্দাহারের নিহত হয়েছেন ৫০ জন পাকতিকায় ১০ জন। এছাড়া দুই প্রদেশে আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক। আফগান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহত ও আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাতের মূলে রয়েছে পাকিস্তানের তালেবানপন্থি সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান (টিটিপি)। বেশ কয়েক বছর আগে পাকিস্তানের সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হওয়া এই গোষ্ঠীটি পাকিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য দিনকে দিন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।
আফগাস্তানের সীমান্তবর্তী পাকিস্তানি প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া টিটিপির প্রধান ঘাঁটি। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর গোষ্ঠীটি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
পাকিস্তানের অভিযোগ—আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের মদত ও আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছে টিটিপি। তবে কাবুল বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামলা চালিয়ে টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদকে হত্যা করে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। হামলার দু’দিন পর ১১ অক্টোবর আফগানিস্তানের সঙ্গে লাগোয়া খাইবার পাখতুনখোয়ার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে তীব্র সংঘাত শুরু হয় পাক-আফগান সেনাবাহিনীর মধ্যে।
চার দিন সংঘাত চলার পর ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি হয় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে। সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয় গত শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১ টায়।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। আজ শনিবার থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে শান্তি সংলাপ শুরু হচ্ছে। এই সংলাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতিতে থাকবে দুই প্রতিবেশী দেশ।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত