
জন্মভূমি ডেস্ক : নতুন বছরের শুরুতে দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে সাহিত্যের পাশাপাশি ইতিহাস নির্ভর বিষয়বস্তুতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে অন্তর্বর্তী সরকার। পরিবর্তিত পাঠ্যসূচি নিয়ে শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষত, ইতিহাস এবং মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনায় আনা সংযোজন-বিয়োজন বিষয়টিকে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। খবর বিবিসি।
গত ৫ই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কারের ঘোষণা দেয়। এর অংশ হিসেবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে পাঠ্যবইগুলো পরিমার্জন করে। নতুন বইগুলোয় মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ঘোষণাসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা গদ্য, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা বা বিষয়বস্তু বাদ দেয়া হয়েছে। নতুন করে স্থান দেয়া হয়েছে জুলাই অগাস্ট আন্দোলনের নানা বিষয়বস্তুসহ নতুন গল্প-কবিতা।
বইয়ের ফ্রন্ট ইনারে শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের নানা ইতিহাসের তথ্য ও ছবি যুক্ত থাকতো। সেগুলো এবারের বইগুলোয় দেখা যায়নি। সেইসাথে আগের মতো বইয়ের প্রথম অংশ জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীতও নেই। পাঠ্যবইয়ের পেছনের মলাটে শেখ হাসিনার বাণী বাদ দিয়ে যুক্ত হয়েছে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময়ে শিক্ষার্থীদের আঁকা গ্রাফিতি। পাঠ্যবইয়ের নিয়মিত কিছু লেখক যেমন মুহাম্মদ জাফর ইকবালের লেখা বাদ দেয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নতুন শিক্ষাক্রম স্থগিত করে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের আলোকে ৪১ জন বিশেষজ্ঞ ৪৪১টি পাঠ্যবই পরিমার্জনের কাজ করেছে বলে জানা গেছে। নতুন বইয়ে এই পরিবর্তন আনার কারণ হিসেবে এনসিটিবির চেয়ারম্যান এ কে এম রিয়াজুল হাসান ইতিহাসে সবার সব অবদান নির্মোহভাবে পাঠ্যবইতে তুলে ধরার প্রচেষ্টার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের অনেকের অবদানকে অবহেলা, অবজ্ঞা করা হয়েছে, বিদ্বেষবশত অনেকের বিরুদ্ধেও লেখা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তককে রাজনৈতিক প্রচারমাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার হয়েছে। এজন্য প্রজন্মের সামনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা জরুরি হয়ে পড়েছিল।”