যশোর অফিস : জ্বালানি তেলের দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে যানবাহন চালকদের মাঝে। প্রতি লিটার ডিজেলের দাম১ টাকা ২৫ পয়সা এবং পেট্রোল ও অকটেনের দাম ৬ টাকা কমছে। অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানে’র ঘোষণার পর ১ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার পর থেকে সারাদেশে নতুন দাম কার্যকর শুরু হয়েছে।
জ্বালানি তেলের নতুন দাম কার্যকর ও তেলের সঠিক পরিমাপ নির্ণয়ে ফিলিং স্টেশন বা পেট্রোল পাম্পগুলো পরিদর্শন ও মূল্য তদারকিতে নেমেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের শিক্ষার্থীরা। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে যশোর শহর ও শহরতলীর পেট্রোল পাম্পগুলোতে এ নতুন দাম ও পরিমাপ তদারকি কার্যক্রম শুরু করে শিক্ষার্থীরা। জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণে ও শিক্ষার্থীদের তদারকি কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন যানবাহন চালক তথা ভোক্তারা। অপরদিকে সামান্য লোকসান হলেও জনগণের মাঝে স্বস্তি ফেরাতে সরকারের এমন উদ্যােগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পাম্প মালিকেরা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের শিক্ষার্থীরা রোববার সকাল থেকে যশোর শহরের গাড়িখানা রোডের তোফাজ্জল ফিলিং স্টেশন, মনিহার মোড়ের যান্ত্রিক ফিলিং স্টেশন, মনিরউদ্দিন ফিলিং স্টেশন, চাচড়াঁ চেকপোস্ট মোড়ের আইয়ুব ফিলিং স্টেশন, আকিজ ফিলিং স্টেশনসহ শহর ও শহরতীলর প্রায় ৮ থেকে ১০টি পেট্রোল পাম্প পরিদর্শন করেন। এ সকল পাম্পগুলোতে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেলের নতুন দাম কার্যকর করা হয়েছে কিনা এবং তেলের পরিমাপ সঠিক আছে কিনা তা তদারকি করেন।
গাড়িখানা রোডে তোফাজ্জল ফিলিং স্টেশনে তেল নিতে আসা মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘জ্বালানী তেলের নতুন দামে আমরা সন্তুষ্ট। জ্বালানী তেলের দাম কমায় জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট আমাদের দাবি থাকবে জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফেরাতে এমন উদ্যােগী কার্যক্রম যেন অব্যাহত থাকে।’
মনিহার যান্ত্রীক ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেল চালক জানান ‘আমার প্রতিদিন এক থেকে দেড় লিটার তেল লাগে। বিগত সরকারের আমলে জ্বালানী তেলের দাম হু-হু করে বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে বর্তমান সরকার পেট্রোল ও অকটেনের দাম ৬ টাকা কমিয়েছে। এতে করে আমাদের মতো বাইকারদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। আমাদের দাবি থাকবে পর্যায়ক্রমে সব ধরণের জ্বালানী তেলের দাম যেন ভোক্তাদের সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসা হয়।’
জনৈক ট্রাকচালক বলেন, ডিজেলের দাম ১ টাকা ২৫ পয়সা কমেছে। আমাদের মনে একটু দুঃখ থেকে গেল। ডিজেলের দাম আরও কমে আসলে যাত্রীবাহী বাস ও পন্যবাহী ট্রাকের খরচ এবং ভাড়াও কমে আসবে ফলে সব মিলিয়ে জনগণ উপকৃত হবে। সরকারের নিকট দাবি থাকবে ডিজেলের মূল্য আরও কমিয়ে আনার।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী যশোর সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন,অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টার ঘোষণার পর গত রাত ১২টার পর থেকে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেলের নতুন দাম কার্যকর শুরু হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা রোববার সকালে যশোর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে অবগত করে পেট্রোল পাম্পগুলো মনিটরিংয়ে বেরিয়েছি। আমরা পর্যায়ক্রমে যশোর শহর ও শহরতলীর সবকয়টি পেট্রোল পাম্পে যাচ্ছি সেখানে নতুন দামে জ্বালানি তেল বিক্রি হচ্ছে কিনা সেটি তদারকি করছি একইসাথে পাম্পগুলোতে তেল সঠিক পরিমাপে বিক্রি করা হচ্ছে কিনা সেটিও আমরা নির্ণয় করছি।’
তিনি বলেন, যেসকল পাম্পগুলোতে আমরা অসংগতি পাব সেই সকল পাম্পগুলোর তালিকা করে আমরা জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করব। তিনি পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আরেক শিক্ষার্থী যশোর সরকারি এমএম কলেজের মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা সকল পাম্প মালিক, এবং ভোক্তাদের সাথে কথা বলেছি। দু-একদিনের সামান্য লোকসান মেনে নিয়েও পাম্প মালিকেরা সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অপরদিকে ভোক্তারাও খুশি। তারা দাবি জানিয়েছেন ডিজেলের দামটা আরও কমানোর একই সাথে দ্রব্য মূল্যের পাশাপাশি সকল জ্বালানী তেলের দাম আরও কমিয়ে জনগণের মধ্যে পূর্ণ স্বস্তি ফিরিয়ে আনা হোক।’
পেট্রোল পাম্প তদারকির সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে শিক্ষার্থী রাকিব এইচ সজীব, মিউনিসিপ্যাল কলেজের শিক্ষার্থী সাহেদ খান, বাদশাহ ফয়সাল ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী সামির হোসেন, যশোর সরকারী পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী আবির হাসান, যশোর সরকারী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী শাওন ইসলাম, সরকারী মহিলা কলেজ রীতি ইয়াসমিনসহ আরও অনেকে।