
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার জাপান সফরে গেছেন। গত বুধবার টোকিওতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার নেতৃত্বে দুই দেশের বৈঠক হয়েছে। বৈঠক শেষে পরস্পরের কৌশলগত অংশীদার হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ও জাপান। এসময় ৮টি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
চীন ও ভারতের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে জাপানের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক স্থাপিত হলো বাংলাদেশের। বিষয়টি অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, সর্বোপরি ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে নিঃসন্দেহে গুরুত্ব বহন করে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্কিত যৌথ বিবৃতিতে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্ব দিয়েছে দুই দেশ। ৩০ দফা যৌথ ঘোষণায় বাংলাদেশ ও জাপানের আগামী দিনগুলোর সম্পর্কের রূপরেখা প্রতিফলিত হয়েছে। এ অঞ্চল ও এর বাইরে শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে দুই দেশই আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি ও শৃঙ্খলা মেনে চলে অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রতি অঙ্গীকার তুলে ধরেছে। গুরুত্ব পেয়েছে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন।
গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে টোকিওর একটি হোটেলে বাছাই করা জাপানি ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাংলাদেশে বেশি পরিমাণ বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ দ্রুত বিনিয়োগের অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।
১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় জাপান। শুরু থেকেই বাংলাদেশের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে রেখেছে জাপান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে জাপান আনুমানিক ২৪.৭২ বিলিয়ন ডলারের অনুদান ও ঋণ দিয়েছে। ১৯৮০ সালের শেষ দিক থেকে বাংলাদেশকে দ্বিপক্ষীয় সহায়তাদানকারী দেশগুলোর মধ্যে জাপান সর্বোচ্চ দাতা দেশ।
বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো চার বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। কয়েক বছরে বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কম্পানির সংখ্যা বেড়েছে।
সম্প্রতি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে জাপান অর্থনৈতিক পার্টনারশিপ গড়ে তুলতে আগ্রহী। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তাঁর নজর এড়ায়নি উল্লেখ করে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে সেই সম্ভাবনার মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে বাংলাদেশের সহযোগী হওয়ার ইচ্ছার কথাও উচ্চারণ করেন তিনি। তারই প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই শেখ হাসিনার এই সফরে।এই সম্পর্ক আরো দৃঢ় হোক, এগিয়ে যাক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।