দৈনিক জন্মভূমি’র সাবেক সম্পাদক, খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহ সভাপতি ওয়াদুদুর রহমান পান্না আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজেউন)। তিনি গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় নগরীর গাজী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। আজ সকাল ১০টায় মরহুমের প্রতিষ্ঠিত শেরে বাংলা রোডস্থ জোহরা খাতুন শিশু বিদ্যা নিকেতনে তার মরদেহ নেওয়া হবে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনের জন্য। পরে বাদ জোহর পশ্চিম বানিয়াখামার মোড়ল বাড়ি জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে নামাজে জানাজা শেষে নগরীর বসুপাড়া কবর স্থানে পিতা-মাতার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।
মরহুমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক ওয়াদুদুর রহমান পান্না দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ফুসফুসে প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। গত শুক্রবার রাতে তিনি অসুস্থ হলে শনিবার সকালে তাকে প্রথমে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে এবং পরে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৫টায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
জনাব ওয়াদুদুর রহমান পান্না ৬০’র দশকে খুলনায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। তিনি সাপ্তাহিক জন্মভূমি’র প্রতিষ্ঠাকালীন বার্তা সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে সাপ্তাহিক জন্মভূমি দৈনিকে প্রকাশ হলে একই পদে তিনি দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দৈনিক জন্মভূমির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শহীদ সাংবাদিক হুমায়ূন কবীর বালুর ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। ২০০৪ সালের ২৭ জুন সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় হুমায়ূন কবীর বালু শাহাদাৎবরণ করার পর থেকে দৈনিক জন্মভূমি’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও পরে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানেও তিনি দৈনিক জন্মভূমি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে থেকে আমৃত্যু তিনি জন্মভূমি পরিবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি দেশ স্বাধীনের পর অধূনালুপ্ত দৈনিক বাংলার বাণীসহ বিভিন্ন পত্রিকার খুলনা প্রতিনিধি ছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ বেতারের শিশুদের শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান কচিকাঁচার আসরসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেছেন। অকৃতদার এই মানুষটি ১৯৮৮ সালে খুলনাতে একটি মানসম্পন্ন স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত জোহরা খাতুন শিশু বিদ্যা নিকেতনটি খুলনার অন্যতম শিশু বিদ্যালয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ওই বিদ্যালয়ের স্বত্ত্বাধিকারী ও পরিচালক ছিলেন। তিনি খুলনাসহ সারা দেশে কিন্ডার গার্টেন স্কুল সমূহ একত্রিত করে বাংলাদেশ কিন্ডার গার্টেন স্কুল এসোসিয়েশন গড়ে তোলেন। এছাড়া জীবদ্দশায় তিনি অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থেকে সেগুলো পরিচালনা করেছেন।