জন্মভূমি ডেস্ক : পাঁচ দিন আগে ঝালকাঠির ছত্রকান্দায় পুকুরে পড়ে যাওয়া বাসটির ফিটনেস সনদ ছিল না। দ্রুতগতিতে চালানো গাড়িটির মিটারও ছিল নষ্ট। আর চালক মোহনের হালকা যান চালনার লাইসেন্স থাকলেও ভারী যানবাহন চালনার কোনো লাইসেন্স ছিল না। তারপরেও মোহন গত তিন বছর ধরে ওই রুটে ভারী যান চালিয়ে আসছিলেন।
আজ বুধবার (২৬ জুলাই) ভোরে সাভারের আশুলিয়া এলাকা থেকে বাসটির চালক মোহনকে গ্রেফতার করে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে এমন তথ্য জানতে পেরেছে এলিট ফোর্সটি। দুপুরে কারওয়ানবাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মোহনের ব্যাপারে বিস্তারিত জানান র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে মালিকদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়। এ ঘটনায় চালকের পাশাপাশি মালিকের কোনো গাফিলাতি থাকলে তাকেও আসামি করা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে করা মামলায় চালকের সহকারী, সুপারভাইজার ও চালককে আসামি করা হয়েছে।
খন্দকার আল মঈন জানান, চালক মোহন দুর্ঘটনার পর কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এরপর ঝালকাঠি, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় তার বিভিন্ন আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে থাকেন। পালিয়ে থাকা অবস্থায় আশুলিয়া থেকে র্যাব তাকে গ্রেফতার করে।
র্যাবকে যা জানিয়েছে মোহন
গ্রেফতার মোহন গত ২২ জুলাই সকাল নয়টায় বাশার-স্মৃতি পরিবহনের বাসটি নিয়ে ভান্ডারিয়া থেকে বরিশাল রওনা হন। পথে বিভিন্ন স্টপেজে ৫৫ জন যাত্রী তোলেন। এরপর বেপরোয়া গতিতে গাড়িটি চালাতে থাকেন। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে ঝালকাঠির ছত্রকান্দায় পৌঁছলে গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও গতির কারণে বাসটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশের পুকুরে পড়ে যায়। এ সময় বাসটি পানিতে ডুবে যায়। কিছু যাত্রী বেরিয়ে আসতে পারলেও আটকা পড়েন অনেকে। সেখান থেকে ওঠে মোহন দ্রুত পালিয়ে যায়। মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় তিন শিশু ও ৮ নারীসহ ১৭ জন নিহত হন। আহত যাত্রীদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল এবং বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
দুর্ঘটনার পর ২২ জুলাই রাতেই ঝালকাঠি সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুশংকর বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- ‘বাসার স্মৃতি’বাসের চালক মোহন, সুপারভাইজার মিজান এবং চালকের সহকারী আকাশ।
দুর্ঘটনার পরদিন সোমবার (২৩ জুলাই) বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় বাসটির সুপারভাইজার মো. ফয়সাল মিজানকে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত