যশোর অফিস : ফুলে-ফুলে ছেয়ে গেছে ফুলের রাজধানী যশোরের গদখালী। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পয়লা ফাল্গুনকে সামনে রেখে যশোরের গদখালি ফুলের বাজার জমজমাট। সব ফুলেরই চাহিদা থাকলেও গোলাপ বাজিমাত করেছে। এবার গোলাপের পাইকারি দামে রেকর্ড ভেঙ্গেছে। চাহিদা থাকায় এদিন রেকর্ড পরিমাণ দামে গোলাপ বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। প্রতিটি গোলাপ ১৫ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। পাইকারি বাজারে গোলাপের এত দাম এর আগে কখনও উঠেনি। শুধুমাত্র রবিবার একদিনেই এক কোটি টাকার গোলাপ কেনাবেচা হয়েছে গদখালীর পাইকারি ফুলের বাজারে। পাশাপাশি গ্লাডিওলাস, জারবেরা ও রজনীগন্ধা ফুলের দামও চড়া। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দিবস দুটি ঘিরে এই অঞ্চলের চাষিরা গত একসপ্তাহে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। এবার চড়ামূল্যে ফুল বিক্রি করতে পারায় গত দুই বছরের করোনা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে ফুলচাষিরা আশাবাদী।ভোর থেকেই সরব হয়ে ওঠে গদখালীর পাইকারি বাজার। বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান- যে যেভাবে পারছেন, নানান জাতের ফুল নিয়ে গদখালী পাইকারি ফুলের মোকামে হাজির হন। যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে গদখালী বাজার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হয়। ৭টা নাগাদ হাট জমজমাট হয়ে ওঠে। উত্তরবঙ্গের বগুড়া, রাজশাহী, গোপালগঞ্জ, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেপারিরা ফুল কিনতে এ বাজারে আসেন। ফুলচাষি ও বেপারিদের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠে গোটা প্রাঙ্গণ। ফুল কিনে বেপারিরা বাসের ছাদে, ইঞ্জিনচালিত আলমসাধু ও পিককাপে করে বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেন। ১০টার মধ্যে হাটের কেনাবেচা শেষ হয়ে যায়।
দিবস দুটির আগে রবিবার ছিল সবচেয়ে বড় হাট। এই হাটে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে গোলাপ চাষি। ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত বরণ উৎসবে গদখালীর গোলাপ সারাদেশে সৌরভ ছড়াবে। গদখালীর ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ি কল্যাণ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, একদিনেই গদখালী বাজার ও গোলাপের খেত থেকে অন্তত ১০ লাখ গোলাপ সারাদেশে পাঠানো হয়েছে। অন্তত ৫০০ ফুলচাষি গোলাপ ফুল নিয়ে মোকামে আসেন।
সৈয়দপুর এলাকার ফুলচাষি আব্দুর কাদের বলেন, ৩০ বছর ধরে নানান জাতের ফুল চাষ করেছি। সবচেয়ে বেশি চাষ করেছি গোলাপ। সেই প্রথম থেকেই বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসে গোলাপের দাম থাকে দ্বিগুণ। তবে গোলাপ কখনোই ১৫ টাকার বেশি হয়নি। এবার রেকর্ড ২৫ টাকা পর্যন্ত গোলাপ বিক্রি করেছি। আর চায়না গোলাপ ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি। এই দামে সব কৃষকই লাভবান হবে। জেলার ১২টি ইউনিয়নে ১২০০ থেকে ১৫০০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়। এ অ লের ৬ হাজার চাষি ফুল উৎপাদন করেন। সারাদেশের চাহিদার প্রায় ৬৫ শতাংশ ফুল যশোরের গদখালি থেকে সরবরাহ করা হয়।