জন্মভূমি ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থল টুঙ্গিপাড়া তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “শুধু বাঙালি জাতি নয়, সারা বিশ্বের বাঙালি জাতির জাতীয়তাবাদী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁকে সমাহিত করার স্থানটি আজ তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে।”
এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রপ্রধান পরিবারের সদস্য ও বঙ্গভবনের কর্মকর্তাদের নিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়ায় যান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেয়ার পর জাতির পিতার সমাধিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে এটাই তাঁর প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন।
এসময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানায় এবং বিউগল করুণ সুর বেজে ওঠে। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সেখানে কবর জিয়ারত, দোয়া এবং মোনাজাতে অংশ নেন।
মোনাজাতে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। সমাধি প্রাঙ্গণে রক্ষিত দর্শনার্থী বইয়েও রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করেন। পরে রাষ্ট্রপতির পরিবারের পক্ষ থেকেও বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী ছিলেন তাঁর সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা ও ছেলে মোহাম্মদ আরশাদ আদনান রনিসহ পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্মীয়গণ, রাষ্ট্রপতির সচিবগণ এবং ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ।
টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার পথে রাষ্ট্রপতি পদ্মা সেতুর মাঝখানে কয়েক মিনিট যাত্রা বিরতি করেন এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে ছবি তোলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে আমি আত্মগোপনে থাকার সময় একদিন কলকাতা আকাশবাণীর একটি অনুষ্ঠান শুনেছিলাম। যেখানে ভাষ্যকার দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যারা হত্যা করলো এবং যারা নিদারুণ করুণ ভাবে নির্মম অবহেলায় সুদূর টঙ্গীপাড়ায় তাঁকে সমাহিত করলো। সেই অযত্ন ও অবহেলায় সমাহিত করার জায়গাটি একদিন সারা বিশ্বের বাঙালি জাতির তীর্থ স্থানে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, দেবদুলাল যথার্থ বলেছিলেন যে শুধু বাঙালি জাতি নয়; সারা বিশ্বের বাঙালি জাতির জাতীয়তাবাদী নেতার সমাহিত স্থানটি আজ তীর্থস্থানেই পরিণত হয়েছে।
পদ্মাসেতু বাঙালি জাতির আত্মনির্ভরতার প্রতীক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন সড়ক পথে পদ্মা সেতু হয়ে টঙ্গীপাড়া থেকে ঢাকা ফেরার পথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, পদ্মা সেতু বাঙালি জাতির অহংকারের প্রতীক এবং আত্মনির্ভরতার প্রতীক।
তিনি এই নির্মাণে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি শেখ হাসিনাকে ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
সাহাবুদ্দিন বলেন, “এই সেতু নির্মাণে কত যে ষড়যন্ত্র ছিল সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।”
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সেই সমস্ত ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে তাঁর সততা, কর্মনিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের কারণে সেদিন এই সেতু নির্মাণে সার্থক হয়েছেন।
দুদকের সাবেক কমিশনার হিসেবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের তথাকথিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় মো. সাহাবুদ্দিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘টুংগীপাড়া থেকে ঢাকার পথে আজকের এই পদ্মা সেতুতে দাঁড়িয়ে অতি অল্প সময়ে জন্য পদ্মার এই মোহনীয় রূপে অবগাহন করছি আর ভাবছি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা।’
নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এই পদ্মা সেতুর কারণে, সাহাবুদ্দিন বলেন, আজ বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি আত্মনির্ভর ও মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে সমগ্র বিশ্বের কাছে পরিচিতি পেয়েছে।
এটা একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও সততার কারণেই সম্ভব হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, আজকে এখানে দাঁড়িয়ে তাই মনে করলাম-একটু দাঁড়াই, একটু দেখি। এই অর্জন, এই আত্মনির্ভরতার প্রতীক, এই অহংকার কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে না দেখলে উপলব্ধি করা মুশকিল।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) জাতির প্রত্যাশা পূরণ করেছেন এবং বাঙালি জাতি তথা বাংলাদেশকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন - যা সত্যিই ঈর্ষণীয়।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত