
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনার বটিয়াঘাটায় বিএনপির কথিত নেতা আবু বক্কর শেখের নির্যাতনে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। তার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না হিন্দু, মুসলমানসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেষার মানুষ। লুটপাট আর অন্যের জমি দখল তার কাছে এখন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করলেও কোন ফল মিলছে না। তিনি এখন এলাকায় হুংকার দিয়ে বলেন, প্রশাসন তার কাছে স্বাভাবিক বিষয়। তার একটা ফোনেই প্রশাসন ছুটে চলে আসে। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে তিনি এখন টক্ অব দ্যা বটিয়াঘাটা।
বটিয়াঘাটার প্রয়াত সাবেক পোষ্ট মাষ্টার আয়ূব আলী সরদারের পরিবার মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে নামধারী বিএনপি নেতা আবু বক্কর বাহিনির হাতে চরম নৃশংসতার শিকার হয়েছেন। আয়ূব আলীর স্ত্রী পারভীন বেগম বটিয়াঘাটা থানায় তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, জোরপূর্বক জায়গা দখল করতে এসে গাছপালা, ঘরদুয়ার ভাংচুর করতে শুরু করে। বাধা দিতে গেলে নির্মম ভাবে তার উপর হামলা করা হয়। সন্ত্রাসীদের লোহার রড, বাঁশের লাঠির আঘাতে তার বাম চোখের নিচে ফুলে কালো হয়ে আছে, হাটুর একাংশ ভেঙ্গে যাবার উপক্রম, হাতের কুনুই ফেটে গেছে। তারা গলার চেইন, কানের দুল ছিড়ে নিয়েছে। তার আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়। অভিযোগে আবু বক্করসহ মাসুদ রহমান শেখ, ইব্রাহীম শেখ ও তানিয়া বেগমের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার পরেই পারভীনকে নিয়ে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা সনদ নিয়ে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মেম্বর রমেন্দ্রনাথ রায় জানান, আবু বক্কর পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়ে আয়ূবের জায়গা দখরের চেষ্টা করেছে। তার স্ত্রীর উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে। আবু বক্কর শেখ বিএনপির কথিত নেতা। আওয়ামীলীগের সময়ে হারুন সাহেবের হাতে ফুলের মালা দিয়ে যোগ দেয়। কোন কালেও সুখদাড়া বাজারে বিএনপি অফিস ছিলনা। অথচ সুচতুর বক্কর ৫ আগষ্টের পর নিজেকে বিএনপি নেতা বানাতে সম্পূর্ণ মিথ্যা ভাবে বিভিন্নজনকে আসামী দিয়ে একটি মামলা করে।
একই এলাকার অর্জুন দাস জানান, মিথ্যা একটি ঘটনা নিয়ে তাকে এবং তার ছেলেকে ডেকে নিয়ে আবু বক্কর মারপিট শুরু করে। পরে থানায় বিষয়টি নিয়ে বসাবসি হলে ক্ষমা চেয়ে রেহাই পায়।
মণি শেখ জানান, দীর্ঘদিন ধরে চাচা আবু বক্কর তাদের উপর অত্যাচার করে আসছে। একই ভাবে মরহুব আয়ূব শেখের স্ত্রী পারভীন বেগমের উপর অত্যাচার শুরু করেছে। তার জায়গাজমি দখল করে নেয়ার পায়তারা করছে।
বিষয়টি সম্পর্কে আবু বক্কর শেখের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জায়গায় গাছ কাটতে গেলে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। আমরা গাছ কাটতে পারিনি। পারভীন মহিলা মানুষ তার গায়ে হাত দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বটিয়াঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো: এজাজুর রহমান শামীম বলেন, আবু বক্কর বিএনপির কেউ নয়। কোন কমিটিতে তার নাম নেই। সে আওয়ামীলীগ করতো। তার কোন প্রকার কাজের দায় বিএনপি নিবে না।
বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আব্দুর রহিম বলেন, বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগের পর এসআই শফিককে ঘটনা স্থলে পাঠানো হয়। তারা এলে অবশ্যই মামলা রেকর্ড করে নেয়া হবে।

