
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নে বারআড়িয়া বাজারে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জ্যোতিষ মন্ডল ও আব্দুল আজীজ স্মরণ সভা বুধবার বেলা বারটায় অনুষ্ঠিত হয়। বারআড়িয়া বাজারে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন, বটিয়াঘাাটা উপাজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ নুরুল আলম। উপস্থিত ছিলেন, সহকারি কমিশনার (ভূমি) আসাদুর রহমান, বারআড়িয়া কলেজ অধ্যক্ষ এসএম ফিরোজ আহমেদ, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মাদ আলী বিশ^াস, সিদ্ধার্থ মল্লিক, সুরখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটু, খুলনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবার রহমান, যুদ্ধকালিন কমান্ডার রীর মুক্তিযোদ্ধা বিনয় কৃষ্ণ সরকার, নুরুল ইসলাম মানিক, ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান সরদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিরঞ্জন কুমার রায়সহ খুলনা, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ১৯৭১ সালে যেসব মুক্তিযোদ্ধা বারআড়িয়া যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়ে ছিলেন, তাদের স্মৃতিচারণে যুদ্ধের কাহিনী উঠে আসে। তারা বলেন, বাজারে মনি গোলাদারের বাড়িতে রাজাকার ঘাঁটি ছিল। রাজাকার সদস্যরা লুটপাট ঘর বাড়িতে অগ্নি সংযোগসহ নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যেত। তারা সুন্দরী গৃহবধু এবং মেয়েদের ধরে এনে ক্যাম্পে আটক রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। গুরুপদ মন্ডল তার কন্যা দশম শ্রেণীর ছাত্রী অঞ্জলী, শিশু সন্তান খোকন ও কন্যা পারুলকে গুলি করে হত্যা করে। গুরুপদ মন্ডলের স্ত্রী গুরুদাসীকে জোর পূর্বক ধরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এমন সংবাদ পেয়ে যুদ্ধকালীন কমান্ডার বিনয় কৃষ্ণ সরকারের নেতৃত্বে ২৮ নভেম্বর ১৯৭১ সালের মধ্যরাতে বারআড়িয়া রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করা হয়। রাজাকাররা দ্বিতল ভবনের উপর থেকে রাইফেল দিয়ে অকাতরে গুলি ছুড়তে থাকে। শেষ রাতের দিকে মুক্তি যোদ্ধা সুন্দরমহল গ্রামের জ্যোতিষ মন্ডল এবং পাইকগাছা থানার মৌখালী গ্রামের আব্দুল আজিজ শহীদ হন। এ যুদ্ধে অংশ নিয়ে ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকুল বিশ্বাস, রাম কৃষ্ণ বিশ্বাস, নুরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, অমর, সুবোধ, হরিপদ, চন্দ্র কান্ত, সন্তোষ, হরিচাঁদ, মিকি, ক্ষীতিষ, তপন, দিদার, আলাউদ্দিন, মোবারক, ওমরআলী, শামছুর রহমান ও আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গী।
যুদ্ধে শহীদ জ্যোতিষ এবং আজিজের স্মৃতি অক্ষুন্ন রাখতে প্রতিবছর ২৯ নভেম্বর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।