
উদ্ধার হয়নি গুরুত্বপূর্ণ আলামত
জন্মভূমি রিপোর্ট : বটিয়াঘাটা উপজেলার ড্রেজার মেশিনের কর্মচারী হাবিব শেখ (৩২) হত্যা মামলার দুই আসামি গ্রেফতার হয়েছে। সোমবার রাতে র্যাব-৬ এর একটি টিম তাদেরকে রূপসা উপজেলার নৈহাটী শ্রীরামপুর গ্রামের জনৈক কবির মোল্লার ইট ভাটা হতে গ্রেফতার করে। হাবিবকে আসামিরা এলোপাতাড়ি মারপিটের পাশাপাশি দুই পায়ে ড্রিল মেশিন দিয়ে ছিদ্র করে, গোপনাঙ্গেও ক্ষত তৈরি করে। এরপর তার বিরুদ্ধে বানোয়াট চুরি মামলার আসামি করে। আদালত থেকে জামিনে মুক্তির পর চিকিৎসধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মামলায় দুই আসামি গ্রেফতার হলেও ১৪ জন এখনও পলাতক রয়েছে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত উল্লেখযোগ্য কোন আলামত জব্দ করতে পারেনি।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, বটিয়াঘাটা উপজেলার দেবীতলা গ্রামের জনৈক এসকেন্দার ফকিরের ছেলে সোহেল ফকির (২৭) এবং রুবেল ফকির (৩৫)। সকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এরপর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত সুলতানা তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মতিয়ার রহমান দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, নিহতের স্ত্রী ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। ১ নং আসামি নজরুল উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হলেও সে সংক্রান্ত কোনো কাগজ-পত্র নিম্ন আদালতে এসে পৌছায়নি বলে আদালতের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তাও তার জামিনের কোনো রি-কল হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন।
র্যাব জানায়, হাবিব মামলার প্রধান আসামি নজরুল ইসলামের ড্রেজার মেশিনে কর্মচারী হিসেবে চাকুরি করতেন। কিন্তু তাকে সময়মত বেতন দেয়া হতো না। পাওনা টাকা চাইলে নজরুল তার সাথে তাল বাহানা করতেন। এরপর ব্যাটারি চুরির অপবাদ দিয়ে তার ওপর ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য্য করেন। যা পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তাকে বেতনের বকেয়া টাকা পরিশোধসহ ব্যাটারি চুরির জরিমানার টাকার ব্যাপারে মিমাংশার জন্য নজরুল তাকে গত ৫ অক্টোবর বিকেলে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে ৬ অক্টোবর কাতিয়ানাংলা বাজারে ড্রেজার মেশিন দেখানোর কথা বলে নিয়ে যাওয়ার পর পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আসামি বাবুল গাজীর দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে হাত-পা বেধে অভিযুক্তরা এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। ড্রিল মেশিন দিয়ে তার দুই হাটুর নিচে ছিদ্র করে। গোপনাঙ্গে বোরখার ব্রুজ দিয়ে ক্ষত তৈরি করে। এরপর ইউপি সদস্য হেমন্ত এবং গ্রাম পুলিশ প্রবীর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ভিকটিমের ওপর সোহেল ফকির নামে এক আসামির ভ্যান চুরির মিথ্যা অপবাদ দেন। এ ঘটনায় হাবিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
সূত্রমতে, ঘটনাস্থল থেকে তাকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে চুরি মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দে করা হয়। জেল-হাজতে থাকা অবস্থায় তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে রাখা হয়। ১১ অক্টোবর তিনি জামিনে মুক্ত হন। এরপর অসুস্থতার কারণে তাকে আবারও খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ অক্টোবর বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, পলাতক আসামিদের গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চলছে।