শেখ আব্দুল হামিদ
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় দু’হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় তিনগুন। চাষীরা বোরো ধানের পরিবর্তে তরমুজ চাষে ঝুঁকে পড়েছে। ধানের চেয়ে তরমুজে প্রায় চারগুণ বেশী লাভ হওয়ায় নারী পুরুষ মিলে তরমুজ ক্ষেতে কাজ করছে। তবে বৃষ্টির অভাবে ক্ষেতে পানি দিতে সমস্যায় পড়েছে কৃষক।
গত বছর মাত্র ৭৮০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়। চলতি বছর দু’হাজার হেক্টরে চাষ হয়েছে। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে বীজ রোপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সুরখালী ইউনিয়নের শাংকেমারী গ্রামের চাষী প্রিয়ব্রত রায় বলেন, তিনি গত বছর দশ বিঘা জমিতে চাষ করেন। ভালো লাভ হওয়ায় এ বছর ৩৫ বিঘায় চাষ করেছেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে বীজ রোপন শেষ পর্যায়ে আছে। ফলন ভালো হলে উৎপাদিত তরমুজ প্রায় ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি হবে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সরকারি ভাবে গভির নলকূপের ব্যবস্থা না থাকায় পানির সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
ভান্ডারকোট ইউনিয়নের গিনিরাবাদ বিলে প্রথম বারে তরমুজের চাষ হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার কৃষক এ বিলে জমি ভাড়া নিয়ে চাষ করছেন। প্রতি বিঘা জমি তিন হাজার টাকায় তারা ভাড়া নিয়েছেন। তারা জানান, কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রতি বিঘার তরমুজ বিক্রি হবে এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকায়। একবিঘা জমি চাষে খরচ হবে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি মাথায় নিয়্ইে চাষ করতে হয়। তারা জানান, গিনিরাবাদ এলাকায় আগে দেড় থেকে দু’শ ফুট গভিরে গেলেই ভূগর্ভস্থ পানি পাওয়া যেত। এবার আড়াইশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ফুট গভিরে যেতে হচ্ছে। তবে চাষের ক্ষেত্রে বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার পরামর্শ অনেক উপকারে আসছে। তারা জমিতে এসেই চাষের খোঁজখবর নিয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আশাকরা যাচ্ছে আগামীতে বটিয়াঘাটা উপজেলায় কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইমানআলী জানান, তারা প্রতিদিন মাঠে ময়দানে যেয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যার ফলে কৃষকরা ভালো ফসল লাভ করছেন এবং উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
বটিয়াঘাটা উজেলা কৃষি অফিসার রবিউল ইসলাম দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, তরমুজে বোরো ধানের চেয়ে বেশী লভ হওয়ায় চাষিরা সেদিকে ঝুঁকে পড়েছে। তাছাড়া বর্ষা কালেও প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়। কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবছর বটিয়াঘাটায় তরমুজের বাম্পার ফলন আশা করা যাচ্ছে। বটিয়াঘাটা কৃষি দপ্তর সর্বদা চাষীদের পাশেই রয়েছে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত