জন্মভূমি ডেস্ক : সুন্দরবন কেন্দ্রিক অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের অপরাধমূলক কাজে বাঁধা দেয়ায় খুলনার কয়রা উপজেলার আওতাধীন সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের সাবেক কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় সাংবাদিকদের জানান, অপরাধীদের সাথে আপস না করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় তাকে হয়রানি করতেই এই মামলা করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায়ের বিরুদ্ধে ঘুষ আদায়ের অভিযোগে কয়রা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সাইদ মোল্যা।
বন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলায় মামলাকারীসহ করেকজনের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা অবৈধভাবে সুন্দরবনের নিষিদ্ধ অভয়ারণ্যে জেলেদের পাঠিয়ে ব্যবসা করেন। এরা মহাজন সেজে জেলেদের পরিচালনা করেন। ওই জেলেরা এতোদিন সুন্দরবনের পাটকোষ্টা টহল ফাঁড়ির আওতাধীন বিভিন্ন নিষিদ্ধ নদী ও খালে কৌশলে অবৈধ ভাবে মাছ ধরতেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর আমাকে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন থেকে ওই পাটকোস্টা টহল ফাঁড়িতে বদলির আদেশ দেয় বনবিভাগ। এরপর অপরাধ সিন্ডিকেটের লোকজন পাটকোস্টা টহল ফাঁড়ির আওতাধীন এলাকায় অবৈধ ভাবে মাছ ধরা চালু রাখার জন্য আমাকে বিভিন্ন প্রলোভনের প্রস্তাব দেয়। আমি রাজি না হয়ে স্পষ্ট বলে দেই, আমার আওতাধীন এলাকায় কোন অবৈধ সুযোগ দেয়া হবেনা। ওই সময়ই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, তাহলে আপনি মামলা খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন। অবশেষে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে মামলাও দিয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর আমার বদলির নির্দেশ হয়েছে আর তারা আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে ২৭ সেপ্টেম্বর।
শ্যামা প্রসাদ রায় বলেন, আমার বিরুদ্ধে মামলাকারীরা ফরেস্ট স্টেশন থেকে জেলেদের বনে প্রবেশের অনুমতিপত্র পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের নিকট থেকে বেশি টাকা নিতেন। বিষয়টি আমি জানার পর এদের ফরেস্ট স্টেশনে ঢুকতে নিষেধ করে দেই। এ কারণে আগে থেকেই আমার বিরুদ্ধে অনেকে ক্ষিপ্ত ছিলেন।
এমনকি মামলার সাক্ষী হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের অনেকেই বনবিভাগের তালিকাভূক্ত বিষদস্যু ও বিভিন্ন বন অপরাধের সাথে জড়িত।
কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের সাবেক কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় বলেন, অপরাধীরা ষড়যন্ত্র করে আমাকে হয়রানি করতে মিথ্যা একটি গল্প সাজিয়ে মামলা করেছে। ভালো কাজ করতে গেলে যদি এভাবে বাধা আসে, তাহলে অনেক সময় কাজের আগ্রহ হারিয়ে যায়। আমি কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনে থাকাকালীন সঠিকভাবে সেখানে দায়িত্ব পালন করেছি। কারো নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার প্রশ্নই আসে না। তবে শুনেছি, এবারের মামলাটি কয়রা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তদন্ত করবেন। আমি আশাবাদী, এতে সঠিক বিষয়টি উঠে আসবে। আমরা আইনগতভাবেই সবকিছু মোকাবিলা করব।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত