মোল্লা আব্দুর রব, বাগেরহাট : বাগেরহাটে সরকারি সেবা বিষয়ক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের (ডিপিএফ) সহযোগিতায় এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো: শাহিনুজ্জামান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী ঝুমুর বালা, জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত কুমার মল্লিক, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো: আকিব উদ্দিন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সালেহা পারভীন, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: কামরুজ্জামান সরকার, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ কুমার বকসি, খানজাহান আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আসিফ উদ্দিন রাখি, বাগেরহাট ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো: আ: সালাম শেখ প্রমুখ।
বাগেরহাট ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের সভাপতি বাবুল সরদারের সঞ্চলনায় গনশুনানিতে অংশগ্রহনকারী নাগরিকরা বিভিন্ন বাগেরহাট জেলায় বিভিন্ন সরকারি সেবা বিষয়ক ত্রুটি ও বিভিন্ন দপ্তরের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরেন।
বিশেষ করে বাগেরহাট জেলা পরিষদের মালিকানাধীন পুকুর খননে অনিয়ম, খননকৃত পুকুরে প্রভাবশালীদের মাছ চাষ এবং সুপেয় পানির জন্য পুকুর পাড়ে বসানো সোলার পিএসএফ নষ্টের বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। জেলা প্রশাসক বিষয়টি খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেষ দেন।
জেলা হাসপাতালে জরুরি বিভাগে সেবা প্রদানের বিনিময়ে টাকা দাবি করে এমন অভিযোগ করে এক নারী বলেন তিনি তার বন্ধু সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে জরুরি বিভাগ থেকে সেবা নিয়েছেন। সেবা প্রদানের পরে জরুরি বিভাগের কর্মচারীরা তার কাছে টাকা দাবি করেছিল। এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং ভবিষ্যতে কেউ টাকা চাইলে, বিষয়টি তত্ত্বাবধায়ককে জানাতে অনুরোধ করেন।
বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রসূতি মায়েদের সেবা পেতে ভোগান্তি ও অনাকাঙ্খিত সিজারিয়ান কমানোর দাবি জানান নাগরিকরা। বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো: আকিব উদ্দিন এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। ভবিষ্যতে অনাকাঙ্খিত সিজার বন্ধ ও প্রসূতি মায়েদের সেবার বিষয়ে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার আশ।বাস দেন।
সরকারি বিভিন্ন দপ্তর থেকে প্রদত্ত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপকার ভোগী নির্ধারনে ব্যাপক অনিয়মের বিষয়টি উঠে আসে গণশুনানিতে আসা নাগরিকদের বক্তব্যে। উপকারভোগী নির্বাচনে আরও বেশি সতর্ক এবং যাচাই বাছাইয়ের নির্দেশ প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়া হয়।
এসব ছাড়াও নানা অভিযোগ করেন নাগরিকগণ। জেলা প্রশাসক ও উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তাগণ ধৈর্য্য ধরে নাগরিকদের বিভিন্ন সমস্যার বিষয় শোনেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, গণশুনানি আসলে নাগরিকদের অভিযোগ শোনার জন্য। এই শুনানীতে যারা আসেন, তারা অভিযোগের মানসিকতা নিয়েই আসেন। তাদের কথা শুনলে জেলার সার্বিক সেবার মান ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করা যায়। এজন্য নিয়মিত গণশুনানি করা হয়ে থেকে। গণশুনানিতে আমরা যেসব অভিযোগ পেয়ে থাকি সেসব অভিযোগ নিস্পত্তি এবং সেবার মান বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় বলে জানান তিনি।