জন্মভূমি ডেস্ক : সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় ৩৫ কোটি ৯০ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সুন্দরবনের বাঘ ও শিকার প্রাণী জরিপ, উঁচুটিলা ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। বাঘের ক্যানাইন ডিসটেম্পার ভাইরাস নিয়ে হবে গবেষণা। সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের (ভিটিআরটি) ও কমিউনিটি পেট্রল গ্রুপের (সিপিজি) সদস্যদের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবনে বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসন হবে। এতে মানুষের হাতে বাঘ হত্যা কমবে এবং বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের। বন্যা, ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় যাতে বাঘগুলো আশ্রয় নিতে পারে এ জন্য সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ১২টি উঁচুটিলা তৈরি করা হবে। শরণখোলা রেঞ্জের ধানসাগর এলাকায় বাঘের আশ্রয়স্থলে দুর্বৃত্তের আগুন নিয়ন্ত্রণে একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। এই টাওয়ার থেকে ওই এলাকায় সুন্দরবনের অভ্যন্তরে লাগা আগুন দেখে দ্রুত নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে পারবেন বনরক্ষী ও স্বেচ্ছাসেবকেরা। এ ছাড়া সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে যাতে বাঘ প্রবেশ না করতে পারে সে জন্য প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৪-৫ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের বেড়া (ফেন্সিং) দেওয়া হবে। এটি সফল হলে পরবর্তী সময়ে ৬০ কিলোমিটার ফেন্সিং করা হবে। প্রকল্পের আওতায় বাঘের ক্যানাইন (মুখে থাকা সামনের বড় দুটি দাঁত) ডিসটেম্পার ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করা হবে। এ জন্য সুন্দরবন থেকে বাঘের মল সংগ্রহ করা অন্য দিকে সুন্দরবনে বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে ৩৪০ জন ভিটিআরটি সদস্য ও ১৮৪ জন সিপিজি সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর সঙ্গে লোকালয়ে আসা দুটি বাঘের শরীরে স্যাটেলাইট ট্রাকার লাগানো হবে। বাঘের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য বনকর্মী-কর্মকর্তা, সিপিজি ও ভিটিআরটি সদস্যদের বিশেষ অ্যাপস দেওয়া হবে। তাঁরা এই অ্যাপসের মাধ্যমে মুঠোফোনে বাঘের গতিবিধি দেখতে পারবেন। এর ফলে লোকালয়ে বাঘ এলে তাঁরা দ্রুত সুন্দরবনে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারবে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ খুব ভালোভাবে চলছে। সাতক্ষীরা ও খুলনা রেঞ্জের বাঘ জরিপের জন্য ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সিপিজি, ভিটিআরটিদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে।