
জন্মভূমি ডেস্ক : রাজধানী ঢাকায় আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে মহাসমাবেশ ডেকেছে তাকে ঘিরে নাশকতার কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ। তবে বহিরাগত কেউ যেন রাজধানীতে ঢুকে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
আজ রবিবার (২২ অক্টোবর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিএমপি কমিশনার কর্তৃক যেকোনো রাজনৈতিক দলই সমাবেশ করার অনুমতি পাবেন, তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেবে পুলিশ। কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্যও পুলিশ কাজ করবে। তবে আমাদের নিয়মিত চেকপোস্ট, টহল অভিযান চলবে। মামলা, ওয়ারেন্টের আসামি ধরার অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোনো ধরণের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতারের নামে হয়রানি করা হচ্ছে না।
বিএনপির পক্ষ থেকে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ডাকা হয়েছে। এই সমাবেশ ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি ও চেকপোস্টের নামে ঢাকায় আসা নেতা-কর্মীদের আটক করা হচ্ছে। এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান হারুন বলেন, এটা ঠিক না। ঢাকায় অনেক কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান আছে। অনেক উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। ডিএমপি সেগুলোর নিরাপত্তা তদারকি দিয়ে থাকে। ঢাকা শহরে এসে বহিরাগতরা যেন কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য আমরা অভিযান পরিচালনা করি। এটা আমাদের রুটিন কাজ। এটা সব সময়ই করি। আজও আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি।
তিনি আরও বলেন, চেকপোস্ট, অভিযান আছে বলেই ঢাকায় মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারছে। টহলদল, চেকপোস্ট না থাকলে তো ঢাকা অপরাধের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান হারুন বলেন, আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন দেখেছি, বিরোধী দলের কোনো মত নেই, এক দল সমাবেশ করতো, আরেক দলকে সমাবেশ করতে দেওয়া হতো না। এখন কিন্তু ঢাকা শহরে একই দিনে ৩/৪টা দল সমাবেশ করছে। প্রত্যেকটা সমাবেশকে আমরা নিরাপত্তা দিচ্ছি। কোনো সমাবেশ ঘিরে অপ্রীতিকর কিছু ঘটছে না। আমরা আশাবাদী আগামী ২৮ অক্টোবরও নাশকতা বা অপ্রীতিকর কিছু ঘটনার আশঙ্কা বা সম্ভাবনা নাই।
হারুন বলেন, আশঙ্কাকে ঘিরেই আমরা কিন্তু নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকি। আমরা প্রত্যেকটা দলের সমাবেশেই ডিএমপি কমিশনার পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করেন। ২৮ অক্টোবর যদি বিএনপি মহাসমাবেশের অনুমতি পায় তবে আমরা পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা দিবো। আইনশৃঙ্খলা যাতে ঠিক থাকে, সাধারণ মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির ১০ লাখ নেতা-কর্মী ঢাকায় ঢুকে গেছে। নানকও তাই বলেছেন। এই তথ্যগুলো তো গোয়েন্দা তথ্যেই পায়। ডিবি পুলিশের কাছে কি এ ধরণের তথ্য রয়েছে? জানতে চাইলে হারুন বলেন, রাজনৈতিক নেতারা কে কি বলেন, সেটা আমরা ভাবছি না। আমরা আমাদের গোয়েন্দা তথ্যের বাইরে যাবার কথা না। আমরা আশ্বস্ত করতে চাই। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। রুটিন চেকপোস্ট, রুটিন কাজ চলবে। মামলা ও ওয়ারেন্টের আসামি ধরার অভিযান চলবে।
সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে থাকা বিএনপি আগামী ২৮ অক্টোবর শনিবার ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে। সেদিন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করতে ইতোমধ্যে ডিএমপির কাছে আবেদন করেছে বিএনপি। ডিএমপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
একই দিন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশে ডেকেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেখানে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। একই দিন কাছাকাছি জায়গায় বড় দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতি। এই অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন নগর পুলিশের ডিবি প্রধান।