জন্মভূমি ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা বলেছেন, বিএনপির জন্ম স্বৈরতন্ত্রের মধ্য দিয়ে অসাংবিধানিকভাবে। দলটি জন্মলগ্ন থেকে ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। তারা দেশ-বিদেশে চক্রান্ত চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা, আর অন্তরে স্বৈরতন্ত্র।
রোববার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা। এসময় প্রথমে সংসদে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু সভাপতিত্ব করেন।
বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, বিএনপি এখন রাষ্ট্র মেরামতের কথা বলছে। কিন্তু তারা স্বাধীনতা মানে না, সংবিধান মানে না, গণতন্ত্র মানে না, জাতির পিতাকে মানে না। যারা সংবিধান মানে না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি হওয়া উচিৎ।
শম্ভু আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত মিলে গোলাম আজমের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিল। তারা কখনো দেশের স্বাধীনতা চায়নি। তারা ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট দেশি-বিদেশিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। খুন-ধর্ষণ ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে দেশকে পিছিয়ে দেয়, পঙ্গু করে দেয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে।
তিনি বলেন, আমরা আমেরিকা, চীন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি, এবং স্বাধীনতা লাভ করেছি। আমরা বীরের জাতি। আমেরিকার জনগণ আমাদের পক্ষে ছিল, তাদের আমি সম্মান জানাই।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস বলেন, বিএনপি দলটিই আসলে দানব, এরা অপশক্তি। দলটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। ওরা গণতন্ত্র বিকাশের প্রধান অন্তরায়।
তিনি আরও বলেন, এদিকে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে আনার জন্য কতিপয় বিদেশি দূতাবাস ও দেশ এবং এক শ্রেণির সুশীল সমাজ উঠেপড়ে লেগেছে। বিএনপি নির্বাচনে আসলেও ভালো, না আসলেও ভালো। ওদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি আর অন্তরে স্বৈরতন্ত্র।
বিএনপিকে দুর্নীতিগ্রস্ত দল উল্লেখ করে মৃণাল কান্তি দাস বলেন, বিএনপি একটি আসনে মনোনয়নের জন্য ৪-৫ জনের কাছ থেকে অর্থ নেয়। তাদের তথাকথিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক লন্ডনে বসে টাকা নিয়ে মনোনয়ন দেয়, আবার খালেদা জিয়া গুলশানে বসে আর একপ্রস্ত অর্থ নেয়, পার্টি অফিসে বসে ফখরুল সাহেবরা আরও কয়েকপ্রস্ত অর্থ নিয়ে এক আসনে ৪-৫ জনকে মনোনয়ন দেন। তারা নেতাকর্মীদের এভাবে ঠকিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন। সে কারণে বিএনপিকে দেশের জনগণ ত্যাগ করেছে।
দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ পর পর তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেল আমরা। তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব মানবতার জননী হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। তারই নেতৃত্বে সমুদ্র বিজয় করেছে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে।
এমপি সিমিন হোসেন রিমি জেলে নিহত তার বাবাসহ চার নেতার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, আজ বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। দেশের প্রতিটি দরিদ্র মানুষ ভিজিডি-ভিজিএফসহ নানা ভাতা পাচ্ছেন। প্রতিটি উপজেলায় অন্তত ৫০ হাজার মানুষ বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা ও বিভিন্ন ভাতা পান। দেশের মানুষ আজ সুখে আছে। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরও বক্তব্য রাখেন নাহিদ ইজাহার খান, এবিএম কবিরুল হক, আহসানুল ইসলাম টিটু, জিন্নাতুল বাকিয়া, রুমানা আলী এবং ফেরদৌস ইসলাম।