
জন্মভূমি ডেস্ক : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, আন্দোলনের নামে বিএনপিকে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে দেবে না সরকার। বিদেশি দূতাবাসেও সবসময় বিএনপির সন্ত্রাসী কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত সরকারে থাকাকালীন অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তা ফিরিয়ে দিতে সংসদে কথা বলার আহ্বান জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে রাজধানীর গুলশানে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত ‘সিরিজ বোমা হামলাকারী বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রু’ শীর্ষক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রশ্নে সোচ্চার হলেও অপারেশন সার্চলাইট ও ’৭৫ এর হত্যাযজ্ঞ নিয়ে সবচেয়ে বড় যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তা নিয়ে কেন সোচ্চার না—এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন শাহরিয়ার আলম।
বাংলাদেশের আইনের শাসনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফিরিয়ে দিতে এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। শাহরিয়ার আলম বঙ্গবন্ধুর আরও এক খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠাতে কানাডার আদালতের প্রতিও অনুরোধ জানান।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পরে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। অপারেশন ক্লিন হার্ট হয়েছে। আওয়ামী লীগের ২০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় একটি মামলাও করা যায়নি। কারণ এটার জন্য আলাদা ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছিল সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের সব দলের কাছে আমার নিবেদন থাকবে, জাতীয় সংসদেও আমরা এ কথাটি বলব, অপারেশন ক্লিনহার্টের সময় যেসব পরিবারের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, তাদের মানবাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। অপরাধী হয়ে থাকলে তারও কিন্তু আইনের আশ্রয় নেয়ার সুযোগ আছে। যত দাগি আসামি হোক না কেন, তার পক্ষে যদি কেউ না-ও দাঁড়ায়, সরকারের দায়িত্ব তার পক্ষে উকিল দাঁড় করিয়ে ডিফেন্স দেয়ার।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতার সূচনা হয়েছিল আসলে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মধ্য দিয়ে। কারণ একটি বড় অংশ পরাজিত হয়েছিল। তারা চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ যেন আবারও সেই ধর্মান্ধতার দিকে ফিরে যায়।’
‘১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের যারা কুশীলব, যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, তারা পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশকে আবারও ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশে পরিণত করা হবে পাকিস্তানের মতো,’ বলেন তিনি।
নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী জানিয়ে শাহরিয়ার আরও বলেন, ‘যারা বলছেন যে, তারা দেখছেন, তারা সবাইকে দেখছেন। আমরা শুনেছি, বিএনপি যে কর্মসূচি দিচ্ছে, তাদের নেতা-কর্মীদের এটা পছন্দ না। তারা লাঠি নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জনসভায় উপস্থিত হতে শুরু করেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাবধান বাণী উচ্চারণ করতে চাই, কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এই শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশে আমরা হতে দিতে পারি না। হতে দেব না। সে বিষয়টিও আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রগুলো ভালো মতো জানে, তারা দেখছেন। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের সার্বক্ষণিক ওয়াকিবহাল রেখেছি।’